সৌদি আরবের জেড্ডায় মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে বৈঠক। সেখানে আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি এবং খনিজচুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসবেন ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। অথচ বৈঠকের আগের রাতেও ইউক্রেনের উপর হামলা থামাল না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী! বরং ইউক্রেনের রাজধানী কিভে রাতভর চলল বিমানহামলা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সারা রাত ধরেই কিভ ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। শুধু আকাশপথেই নয়, কুর্স্কের মতো কোনও কোনও জায়গায় হামলা চলছে স্থলপথেও। মেয়র ভিটালি ক্লিটস্কো জানিয়েছেন, সম্ভাব্য বিমানহামলা প্রতিহত করতে কিভের আকাশে নিরন্তর উড়ছে ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী।
আরও পড়ুন:
জেড্ডায় বৈঠকের প্রাক্কালে যুদ্ধাবসান নিয়ে আশাবাদী ছিল দু’পক্ষই। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এ-ও জানিয়েছিলেন, সৌদি আরবে মার্কিন প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় ‘গঠনমূলক’ অবস্থান নেবে ইউক্রেন। অথচ বৈঠকের আগে চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই কুর্স্ক-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণের অভিঘাত বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। রবিবারও সারা রাত ধরে কুর্স্কে ইউক্রেনীয় সেনার একাধিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল রুশ স্থলসেনা। ইউক্রেন সেনার নিয়ন্ত্রণে থাকা সুমে এলাকাতেও শুরু হয়েছিল সংঘর্ষ। সেই সঙ্গে রবিবার রাত থেকে ধারাবাহিক ভাবে চলছে ড্রোন হামলা। জ়েলেনস্কি সরকারের দাবি, এ পর্যন্ত ১৩০টিরও বেশি রুশ ড্রোন ধ্বংস করেছে তারা।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয় জ়েলেনস্কির। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন দুই রাষ্ট্রনেতা। ভেস্তে যায় আমেরিকা-ইউক্রেন খনিজ চুক্তি। মধ্যাহ্নভোজ না করেই হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তার পর থেকেই আতশকাচের তলায় রয়েছে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করতে ইউক্রেনকে ‘চাপে রাখতে’ একের পর এক সাহায্য বন্ধের ঘোষণা করছেন ট্রাম্প। তবে এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পরে অবশ্য জ়েলেনস্কি জানান, ওই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য তিনি ‘অনুতপ্ত’। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসতেও রাজি হন তিনি।