ছবি: সংগৃহীত।
শুধু শাস্ত্রবিধি মেনে নয়, এ বছর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে দুর্গাপুজোয়।
শহরের বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তারাই জানাচ্ছেন, করোনা আবহে স্বাস্থ্য-বিধির উপরেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে কত জন দর্শককে একসঙ্গে মণ্ডপে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে, কী ভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে সে সব দিকে নজর রাখার পাশাপাশি পুজোর পদ্ধতিতেও বেশ কিছু পরিবর্তন করতে চলেছেন তাঁরা।
গৌরীবাড়ি এলাকার একটি পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মান্টা মিশ্র জানাচ্ছেন, তাঁরা এ বারের পুজোয় বেশ কিছু সামগ্রী পাল্টে ফেলেছেন। যেমন পঞ্চপ্রদীপ, চামর, কর্পূরদানি, কোশাকুশির সঙ্গে জোড়া হচ্ছে ফুট তিনেকের লোহার রড। তিনি বলেন, “আরতির সময়ে পঞ্চপ্রদীপের তাপ নিতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। চামরের বাতাস নেওয়া বা চরণামৃত খাওয়ার জন্য ভিড় জমে। এ বার তাই এই সব জিনিসের হাতল বড় করে দেওয়া হচ্ছে। পুরোহিতমশাই দূর থেকেই দর্শনার্থীদের চরণামৃত দিতে বা পঞ্চপ্রদীপ এগিয়ে দিতে পারবেন। তাতে মানুষ এক জায়গায় ভিড় কম করবেন।” পঞ্চপ্রদীপ, চামরের এই হাতল বানানোর কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানালেন ওই পুজো কমিটির সদস্যরা।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে মেট্রো চালু, কোথায় কীভাবে পাবেন ই-পাস
অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো নেই বলে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের মাইক বেঁধে ক্লাস নিতে দেখা গিয়েছে। ছাত্রেরা বাড়িতে বসেই মাইকে তাঁদের কথা শুনে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। এই ভাবনাই কাজে লাগাচ্ছে টালা এলাকার একটি পুজো কমিটি। ওই পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, “সন্ধিপুজোয় অংশগ্রহণ করেন পাড়ার বেশির ভাগ বাসিন্দাই। এ বার আমরা তাঁদের বলেছি, সন্ধিপুজোর অঞ্জলি বাড়িতে বসেই দিন। পুরোহিতমশাই মাইকে মন্ত্র বলবেন, সকলে বাড়িতে বসে সেই মন্ত্র শুনে অঞ্জলি দিতে পারবেন। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্ধিপুজোর লাইভও আমরা দেখাব। ফলে ঠাকুরের সামনে থাকার মতোই অভিজ্ঞতা হবে।’’ অভিষেক জানান, তাঁদের পুজোর এ বার শততম বছর। সেই উপলক্ষে অনেক পরিকল্পনা তাঁদের ছিল। কিন্তু করোনার জেরে অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হচ্ছে। দূরত্ব-বিধি বজায় রেখে, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে পুজো করাটাই তাঁরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন।
স্বাস্থ্য-বিধি মানতে গিয়ে এ বার অঞ্জলির ফুলই রাখছে না দমদম পার্কের একটি পুজো কমিটি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ প্রসাদ জানান, অঞ্জলির ফুল যে ভাবে হাতে হাতে দেওয়া হয় এবং পরে ঝুড়িতে সংগ্রহ করা হয়, তার জেরে স্বাস্থ্য-বিধি ভঙ্গ হতে পারে। তাই বিনা ফুলে করজোড়ে অঞ্জলির ব্যবস্থা করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পুজোর ভোগ বিতরণের ব্যবস্থাও রাখছি না। ভোগ হবে। কিন্তু অল্প পরিমাণে, শুধু নিবেদনের জন্য।’’
তেঘরিয়ার কাছে অর্জুনপুরের একটি পুজো কমিটি অবশ্য অঞ্জলি থেকে ফুল বাদ দিচ্ছে না। তবে মণ্ডপে রাখা হবে একাধিক ঝুড়ি, অঞ্জলি দেওয়ার পরে ফুল ফেলতে হবে নির্দিষ্ট ঝুড়িতেই। ওই পুজো কমিটির এক সদস্য তমাল দত্ত বলেন, “পুজোর আচারে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে পুজো করার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য দু’টি অ্যানিমেশন চরিত্রের সাহায্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালানো হবে। এই চরিত্র দু’টি হল একটি শিশু পুটু ও তার কুকুর পাপি। পুটু এবং পাপি বিশেষত বাচ্চাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করায় সাহায্য করবে বলে আমাদের আশা।’’
অঞ্জলির ফুল ফেলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে ভবানীপুর এলাকার একটি পুজো কমিটিও। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শৈবাল রায়চৌধুরী জানান, মণ্ডপে একটি দশ ফুট লম্বা হাতে ফেলতে হবে অঞ্জলির ফুল। ওই হাতের মাধ্যমেই সেই ফুল দেওয়া হবে প্রতিমার পায়ে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy