Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

চাহিদা তুঙ্গে মাছ-আনাজের, ভরসা সরকারি জোগান

রাজ্যের ২২টি জায়গায় বিশাল এলাকা জুড়ে পর্ষদের খামার রয়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করার ভিড়।—ছবি পিটিআই।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করার ভিড়।—ছবি পিটিআই।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৩:২০
Share: Save:

মাসখানেক আগে থেকেই ই-রিকশার মাধ্যমে সল্টলেক ও নিউ টাউনে বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল, আনাজ থেকে শুরু করে মাছ-মাংস পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ। লকডাউন শুরু হতেই পর্ষদের সেই পরিষেবার চাহিদা এখন তুঙ্গে উঠেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এখন অধিকাংশ দোকানপাটই বন্ধ। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে দিনভর কাজ করে চলেছে পর্ষদ। একই ভাবে কলকাতা ও বিধাননগর পুর এলাকাতেও বিভিন্ন কাউন্সিলরেরা তাঁদের ওয়ার্ডে থাকা প্রবীণ নাগরিকদের বাড়িতে খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।

রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সল্টলেক ও নিউ টাউনে বহু একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন। এ রকম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আমাদের গাড়ি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে।’’

রাজ্যের ২২টি জায়গায় বিশাল এলাকা জুড়ে পর্ষদের খামার রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা ও গাইঘাটা, নদিয়ার হরিণঘাটা ও রানাঘাট, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, হাওড়ার বাগনান, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, বর্ধমানের মেমারি ও ওড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা, বাঁকুড়ার সোনামুখী, বীরভূমের নলহাটি, হুগলির বৈঁচি এবং পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে পর্ষদের খামারে জৈব পদ্ধতিতে আনাজ চাষ ছাড়াও গবাদি পশু প্রতিপালন করা হয়। এ ছাড়া, মালদহের রতুয়া, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ও গোয়ালপোখর, দার্জিলিঙের কালিম্পং, শিলিগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা ও কোচবিহারেও জৈব চাষ করা হয়। পর্ষদের প্রশাসনিক সচিব সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খামার থেকে আসা আনাজ ও মাছ-মাংস প্রতি ভোরে গাড়ি করে সল্টলেকে পৌঁছচ্ছে। তার পরে সকাল থেকে দশটি ই-রিকশায় করে ওই সমস্ত খাবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, খাদ্যসামগ্রী হোয়াটসঅ্যাপ (নম্বর: ৯১৬৩১২৩৫৫৬) এবং ইমেলে (এইচকিউ.ডব্লিউবিসিএডিসি@জিমেল.কম) অর্ডার দেওয়া যাবে।

সল্টলেকের বিডি ব্লকের বাসিন্দা, বৃদ্ধ সমর রায় বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির কাছেই পর্ষদের ই-রিকশা থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনতে পেরে আপ্লুত। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে শুধু আমি ও আমার স্ত্রী। কাজের লোকেরা আসছেন না। এই পরিস্থিতিতে হেঁটে বাজার যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। সরকারি তরফে যে ভাবে বাড়ির দরজায় আনাজ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে, তাতে আমাদের মতো প্রবীণেরা খুব উপকৃত হচ্ছেন।’’ তবে সরবরাহ আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বিষয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরবরাহের কাজে ই-রিকশার সংখ্যা বাড়ানো যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে।’’ পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, জৈব পদ্ধতিতে ফলানো আলু, পেঁয়াজ, টোম্যাটো, ঢেঁড়শ ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে তিন রকমের চাল, মশলা, মাছ, মাংসও।

পর্ষদের প্রশাসনিক সচিবের কথায়, ‘‘সল্টলেক, নিউ টাউন ছাড়াও হাওড়ার আন্দুল ও দমদমে ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে আমরা খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করছি।’’ মন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘জরুরি পরিস্থিতিতে কলকাতা ও সল্টলেকের সরকারি ‘সুফল বাংলা’র স্টলেও সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের খামারে চাষ করা খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Fish Vegetable Food Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy