প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বেহালায় তৈরি হবে কমিউনিটি হল। কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে সম্প্রতি এই কমিউনিটি হল তৈরির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। কিন্তু এত খরচ করে কমিউনিটি হল তৈরির যৌক্তিকতা কী, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে পানীয় জল, আলো, রাস্তা-সহ বেশ কিছু নাগরিক পরিষেবাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অডিটোরিয়াম, স্যুইমিং পুল তৈরি-সহ যেগুলি প্রাথমিক পুর পরিষেবার কাজ নয়, সেগুলির ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে ইতিমধ্যেই কড়াকড়ি শুরু করেছে দফতর। সেখানে বিশাল অঙ্কের টাকা ব্যয়ে কমিউনিটি হল তৈরির প্রকল্প নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি পুরনো প্রকল্প। নগরোন্নয়ন দফতর অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করার অনেক আগেই ওই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে মেয়র পরিষদের বৈঠকে তা পাশ করানো হয়েছে মাত্র।
পুরসভা সূত্রের খবর, ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে অজন্তা সিনেমা হলের বিপরীতে ওই কমিউনিটি হলটি তৈরির জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারের থেকে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কারণ, যে জমিতে ওই কমিউনিটি হল তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তা রাজ্য সরকারের। পুরসভা ও সরকারি প্রতিনিধিরা ওই জমি পরে সরেজমিন পরিদর্শন করে একটি রিপোর্টও তৈরি করেন। তার পরেই প্রস্তাব আকারে তা মেয়র পরিষদের বৈঠকে তোলা হয়।
পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এ নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়লেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে দোলাচলে রয়েছে পুর প্রশাসন। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কড়াকড়ির বিষয়টিও এই মুহূর্তে পুর প্রশাসনের অন্দরমহলে আলোচ্য বিষয়। কারণ, কোন প্রকল্পের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারের থেকে অর্থ চাওয়া হবে, তারই তালিকা তৈরি করছেন আধিকারিকদের একাংশ। নগরোন্নয়ন দফতরের থেকে প্রস্তাবিত হল তৈরিতে অর্থ সাহায্য না-চাওয়া হলেও পুরসভার ভাঁড়ার থেকে এখন দেড় কোটি টাকা খরচ করা কতটা প্রাসঙ্গিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই সরকারি অনুমতির আগে ওই কমিউনিটি হল তৈরির কাজ শুরু হবে, না কি অনুমতির জন্য অপেক্ষা করা হবে— সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। যদিও এক পদস্থ পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘কমিউনিটি হল তৈরির খরচ পুরসভাই বহন করবে বলে এখনও ঠিক রয়েছে। কিন্তু জমি যেহেতু রাজ্য সরকারের, তাই অনুমোদনেরও একটা বিষয় থাকে। এখানে অন্য কোনও বিষয় নেই।’’
১৩ নম্বর বরো অফিস সূত্রের খবর, এক সময়ে ওই সরকারি জমি জবরদখল হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কোনওমতে তা ঠেকানো যায়। কিন্তু ফের তা ফেলে রাখা হলে ওই জমি প্রোমোটারদের দখলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। তাই সেখানে কমিউনিটি হল তৈরির প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘যেখানে-সেখানে কমিউনিটি হল তৈরির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে ঠিকই। কিন্তু প্রয়োজনের ভিত্তিতে তো তৈরি করা যেতেই পারে।’’
বেহালার ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অশোকা মণ্ডল এই প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘ওয়ার্ডে একটিও কমিউনিটি হল নেই। সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্যই কমিউনিটি হল পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুরসভাই টাকা দেবে বলেছে। আর্থিক অনুমোদনও তো হয়ে গিয়েছে শুনেছি। দেখা যাক কী হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy