Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Jadavpur University

যাদবপুরের সমাবর্তনে প্রধান অতিথি নিয়ে বিতর্ক

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পক্ষের বক্তব্য, সেখানকার কর্মসমিতিতে (ইসি) এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আবার শিক্ষক সমিতির (জুটা) পক্ষ থেকে আপত্তি জগদেশ কুমারকে আনা নিয়েই।

An image of Jadavpur University

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৬
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসাবে আসছেন ইউজিসি-র চেয়ারম্যান মামিডালা জগদেশ কুমার। যাদবপুরের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন। আগামী ২৪ ডিসেম্বর এই সমাবর্তনে নিয়ম অনুযায়ী প্রধান অতিথির দীক্ষান্ত ভাষণ দেওয়ার কথা। তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক ছড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পক্ষের বক্তব্য, সেখানকার কর্মসমিতিতে (ইসি) এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আবার শিক্ষক সমিতির (জুটা) পক্ষ থেকে আপত্তি জগদেশ কুমারকে আনা নিয়েই। এ দিন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বলেন, ‘‘ইসি-র বৈঠকে সমাবর্তনের প্রধান অতিথি হিসাবে ইসরোর চেয়ারম্যান, এআইসিটিই-র চেয়ারম্যান এবং ইউজিসি-র চেয়ারম্যান— এই তিনটি নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পরে ইউজিসি-র চেয়ারম্যান সমাবর্তনে আসার সম্মতি জানান।’’

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘ইসি-তে শুধু ইসরোর চেয়ারম্যানের নাম উঠেছিল। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এই তথ্য প্রথম শুনলাম।’’
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন বার বার বিতর্ক তৈরি হয়েছে জগদেশ কুমারকে ঘিরে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে রামায়ণ-মহাভারত পড়ানোর জন্য সক্রিয় হয়ে তিনি বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ জগদেশকে এর পরে ইউজিসি-র চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়।

এ দিন জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘সমাবর্তনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির শিক্ষাবিদদের আনা উচিত বলে মনে করি। বিতর্কিত, নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতের হয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের না আনাই উচিত।’’ সেই সঙ্গে কর্মসমিতিতে এমন সিদ্ধান্ত হলে তার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সম্প্রতি স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি ছাড়া কর্মসমিতির বৈঠক করলে তা বিধিভঙ্গের শামিল হবে বলে জানিয়েছে ওই দফতর। ফলে কর্মসমিতির বৈঠক স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অক্টোবরে, পুজোর আগে উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি ছাড়াই কর্মসমিতির বৈঠক হয়। যেখানে সমাবর্তনের প্রধান অতিথির নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। জুটা-র সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, এক দিকে কর্মসমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলা হলেও আদৌ তা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্য দিকে, সেই বৈঠকের আইনি বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা শৌর্যদীপ্ত দে বলেন, ‘‘ইউজিসি প্রধান আসতেই পারেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্থিক সাহায্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বন্ধ করেছে। সাম্প্রতিক র‌্যাগিং‌-কাণ্ডে প্রথম দিকে ইউজিসি-র চাপ থাকলেও এখন তা দেখা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ র‌্যাগিং‌য়ের বিষয়টি এক কমিটি থেকে আর এক কমিটিতে ঘোরাচ্ছেন। আশা করি, ইউজিসি চেয়ারম্যান বিষয়গুলি নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ করবেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE