প্রতীকী ছবি
স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর জীবন বিমার টাকা পেতে আবেদন করেছিলেন স্ত্রী। তখনই জানতে পারেন, এজেন্ট প্রিমিয়ামের টাকা দেরি করে জমা দেওয়ার কারণে তাঁর স্বামীর বিমা বাতিল হয়ে গিয়েছে! বিমার টাকা পেতে এর পরে একাধিক বার জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) দফতরে ঘুরেও কাজ হয়নি। শেষে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন তিনি। ওই মহিলা বিমার প্রিমিয়াম বাবদ যে টাকা জমা করেছিলেন, সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে সম্প্রতি এলআইসি-কে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বাসিন্দা সাধন নস্কর ২০০৯ সালের অগস্টে পাঁচ লক্ষ টাকার একটি বিমা করেছিলেন। এক জন এলআইসি এজেন্টের হাত দিয়ে সেই বিমার প্রিমিয়াম হিসেবে তিন মাস অন্তর অন্তর ৬,১২৫ টাকা দিতেন। ২০১১ সালের প্রথমে এক বার প্রিমিয়াম সময়মতো জমা দিতে পারেননি। সে কারণে এর পরে জরিমানা-সহ প্রিমিয়ামের টাকা ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে সময়মতো এজেন্টকে হাতে দিয়েছিলেন তিনি।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এজেন্টের হাতে টাকা দেওয়ার কিছু দিন পরে, ১৮ মে সকাল ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ সাধনবাবু হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তাঁর স্ত্রী কুন্তলিকা নস্কর জানতে পারেন, সেই দিনই দুপুরে ১২টা ৩৫ মিনিট নাগাদ সাধনবাবুর বকেয়া প্রিমিয়ামের টাকা এলআইসি অফিসে জমা করেছেন তাঁর এজেন্ট।
এর পরে সাধনবাবুর বিমার টাকা ফিরিয়ে দিতে জীবন বিমা অফিসে বার বার জানিয়েও কাজ না হওয়ায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে এলআইসি এবং ওই এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করেন কুন্তলিকাদেবী। ২০১৭ সালের অগস্টে ওই আদালত এলআইসি-কে ক্ষতিপূরণ-সহ চুক্তিবদ্ধ বিমার অঙ্কের পুরোটাই, অর্থাৎ পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়।
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে গিয়েছিলেন এলআইসি কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আদালত রায় দেওয়ার সময়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার রায়ের তুলনা টেনে জানায়, এজেন্টের মাধ্যমে প্রিমিয়ামের টাকা জমা দিতে দেরি হলে পলিসি বাতিল হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে গ্রাহক এলআইসি-র কাছে কোনও দাবি করতে পারবেন না। তাই জেলা আদালতের রায়কে শিথিল করে ওই গ্রাহককে শুধু প্রিমিয়ামের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য এলআইসি-কে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
মামলাকারীর আইনজীবী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই রায়ে আমার মক্কেল সন্তুষ্ট নন। লকডাউনের কারণে দিল্লিতে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে পাল্টা মামলা করতে আমাদের বিলম্ব হচ্ছে।’’ এলআইসি-র তরফে আইনজীবী সুরজিৎ আঢ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি এলআইসির আইনি বিভাগ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। আমরা আদালতের রায় মেনে চলতে বাধ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy