Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ভোটে বিধাননগর

কংগ্রেসের বাজি তৃণমূল ছেড়ে আসা দুই ‘ঘোড়া’

ভাঙা তরী, ছেঁড়া পাল। তবু ভেসে থাকতে হবে। ভেসে থাকতে গিয়ে যাঁদের উপরে ভরসা, তাঁরা ‘হাড়ি’র লোক। কিন্তু তাতে ভোট বৈতরণী পার হবে কি না, রাজনৈতিক অঙ্কে এখনই তা বলা যাচ্ছে না। তবে দলের মুখরক্ষায় আপাতত সেই দুই ব্যক্তিই সম্বল।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী দেবরাজ চক্রবর্তী। সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা কংগ্রেস সভাপতি তাপস মজুমদার।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী দেবরাজ চক্রবর্তী। সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা কংগ্রেস সভাপতি তাপস মজুমদার।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় ও কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:২২
Share: Save:

ভাঙা তরী, ছেঁড়া পাল। তবু ভেসে থাকতে হবে। ভেসে থাকতে গিয়ে যাঁদের উপরে ভরসা, তাঁরা ‘হাড়ি’র লোক। কিন্তু তাতে ভোট বৈতরণী পার হবে কি না, রাজনৈতিক অঙ্কে এখনই তা বলা যাচ্ছে না। তবে দলের মুখরক্ষায় আপাতত সেই দুই ব্যক্তিই সম্বল।

বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনে কংগ্রেসের অবস্থা কার্যত এমনই। তাঁদের ভরসার সেই দু’জন কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক দেবরাজ চক্রবর্তী ও সল্টলেকের গত পুরবোর্ডের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক সুদীপ দে। শাসক দলের শিবির থেকে দু’জনকে কার্যত কেড়ে নিয়ে ‘চমক’ দিয়েছে কংগ্রেস।

দেবরাজ লড়ছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। সল্টলেকের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা চক্রবর্ত়ীর বিরুদ্ধেই লড়ছেন সুদীপ। কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের দাবি, বিধাননগর পুর-নিগম এলাকায় সংগঠন শক্তিশালী নয়। সেখানে ৬টি আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি দল। কিন্তু বিধাননগরে পুর-নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেস নেতা দেবমাল্য রায় বলেন, ‘‘৪১টির মধ্যে ৩৫টি আসনে প্রার্থী দিয়ে প্রমাণ করেছি যে এখনও আমরা লড়াইয়ে আছি।’’

কংগ্রেসের কাছে বিধাননগরে আপাতত ‘ডার্ক হর্স’ দেবরাজই। তাই তাঁর আসনটিই পাখির চোখ। প্রার্থী হওয়ার পরে দেবরাজের জন্য প্রচারে এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলা কংগ্রেস সভাপতি তাপস মজুমদারকে দেখা গেল দেবরাজকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরতে।


১০ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী বিকাশ গুপ্ত।

কংগ্রেস নেতাদের দাবি, মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বা রাজ্যসভার দোর্দণ্ডপ্রতাপ সাংসদ দোলা সেনের ঘরের ছেলে ছিলেন দেবরাজ। তাপসবাবুর কথায়, ‘‘পূর্ণেন্দুবাবুদের ভোট মেশিনারির একাংশ দেবরাজের সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে এসেছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের কাছে মুখ বাঁচানোর লড়াই। দেবরাজের সঙ্গে ওই ওয়ার্ডের মানুষের ব্যক্তিগত স্তরে সম্পর্ক রয়েছে। ওঁকে হারানো তৃণমূলের পক্ষে কঠিন হবে।’’

দেবরাজের কথায়, ‘‘রক্তের প্রয়োজন থেকে হাসপাতালে রোগী ভর্তি, মন্ত্রীর আপ্ত-সহায়ক থাকার সুবাদে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সব কাজ দেখতে হত। মানুষের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয়। তাই ভোট পাওয়া নিয়ে আমার কোনও চিন্তা নেই।’’

কংগ্রেস নেতাদের দাবি, সংগঠনের নিরিখে কিছু আসনে তাঁরা লড়াই দিতে পারবেন। সেই হিসেবে ৭ নম্বর ওয়ার্ডটি ছাড়া ৬ , ১৬ আর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডকে কংগ্রেস গুরুত্ব দিচ্ছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সমীর হাজরাও তৃণমূল ভেঙে কংগ্রেস এসেছেন। অন্য দিকে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সোমেশ্বর বাগুইকে (কাবু) নিয়েও স্বপ্নের জাল বুনছে কংগ্রেস। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপবাবু লড়ছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘অনৈতিক কাজের জন্য সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম। একই কারণে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছি।’’

—নিজস্ব চিত্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE