ক্লাবে ভাঙচুরের পরে। রবিবার, বাঘা যতীন এলাকায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক Sourced by the ABP
ভেঙে দেওয়া হয়েছে পাখা। তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে টিভি। ভেঙেচুরে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে ক্লাব। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে ক্লাবের
সদস্যদের। ছোড়া হয়েছে বিয়ারের বোতল। হাত কেটে গিয়েছে ক্লাবের সদস্যদের। সবটাই প্রকাশ্য রাস্তায় মদ্যপানের বিরোধিতা করায়, অভিযোগ এমনই। তার জেরেই শনিবার গভীর রাতে ওই তাণ্ডব চলে বাঘা যতীনের ৩ নম্বর বিদ্যাসাগর কলোনিতে। নেতাজিনগর থানার পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার
করলেও ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ, ১০০ ডায়ালে একাধিক বার ফোন করা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। মার খাওয়ার পরে থানায় গিয়ে পুলিশকে ডেকে আনা হয়। কিন্তু
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি বলেই অভিযোগ ক্লাবের সদস্যদের।
কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে রয়েছে ৩ নম্বর বিদ্যাসাগর কলোনির রুদ্রাক্ষ এভারগ্রিন ক্লাব। শনিবার রাতে সেখানে স্থানীয় এক প্রোমোটারের নেতৃত্বে হামলা চলে বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ওই পাড়ায়। রবিবার স্থানীয় বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার ও স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘটনাস্থলে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার মানুষ। তাঁরা অভিযোগ করেন, মাথার উপরে বড় হাত থাকায় এত বড় ঘটনা ঘটানোর সাহস পেয়েছে দুষ্কৃতীরা।
কী ঘটেছিল?
ক্লাবের সদস্যেরা জানান, পাড়ার এক জায়গায় ওই প্রোমোটার ও তাঁর লোকজন প্রকাশ্যেই মদ্যপান করেন। ক্লাবের কিছু সদস্য শনিবার তার বিরোধিতা করেন। তার পরেই রাতে ওই আক্রমণ করা হয়। বিয়ারের ভাঙা বোতলে হাত কেটেছে বিশ্বজিৎ সাহা নামে এক যুবকের। তিনি জানান, শনিবার রাতে পাড়ায় কালীপুজোর ভোগ বিতরণের পরে তাঁরা ক্লাবের ভিতরে বসেছিলেন। সেই সময়ে দুষ্কৃতীদের ৫০-৬০ জনের একটি বিরাট দল এসে ক্লাবে হামলা চালায়। বিশ্বজিতের অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীদের একটি বিরাট দল আচমকা ক্লাবে ঢুকে সদস্যদের মারধর করা শুরু করে। রড, উইকেট নিয়ে আক্রমণ করা হয়। বিয়ারের বোতল ছোড়া হয়। বোতল ভেঙে গিয়ে হাত কাটে আমার ও আরও কয়েক জনের। আমার হাতে সেলাই করতে হয়েছে।’’
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের এক প্রান্তে থাকা ক্লাবটিতে ভেঙে পড়ে রয়েছে চেয়ার, পাখা। মেঝেয় চাপ চাপ রক্ত। আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষ। ক্লাবের
সদস্যদের দাবি, ক্লাবের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিতেও বলা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কোনও ভাবে ছেলেরা বেরিয়ে আসেন। তন্ময় সাহা নামে অন্য এক যুবক বলেন, ‘‘আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই প্রোমোটারের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। বেশির ভাগ লোকজন মত্ত অবস্থায় ছিলেন। ক্লাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে বলা হচ্ছিল। কোনও ভাবে আমরা রেহাই পেয়েছি।’’
স্থানীয় বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার ও পুর প্রতিনিধি মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,
দুষ্কৃতীদের যত জনকে চিনতে পারা গিয়েছে, সবার বিরুদ্ধেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে এলাকায় দুষ্কৃতীদের এত বাড়বাড়ন্ত? কেন প্রকাশ্যে মদ্যপান ঠেকানো যায়নি? পুর প্রতিনিধি মিতালি বলেন, ‘‘এর আগে প্রকাশ্যে মদ্যপানের অভিযোগ পেয়ে সেই ঠেক ভেঙে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার কিছু জানানো হয়নি আমাকে। আমি সব সময়ে ওয়ার্ডে সময় দিই।’’ বিধায়ক দেবব্রত বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের কেউ রেহাই পাবে না। প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
পুলিশ অবশ্য অভিযোগ না নিতে চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ দিকে ঘটনায় অভিযুক্ত প্রোমোটারের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। বিধায়ক জানান, ওই ব্যক্তির খোঁজ করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy