Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctors' Protest

‘লড়ে যান, পাশে আছি’! জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় সাহায্যের ঢল, কেউ নিয়ে যাচ্ছেন জল, কেউ খাবার

আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বাড়ি থেকে খাবার, জল নিয়ে আসছেন বহু মানুষ। সাধারণ মানুষের এই উদ্যোগে কৃতজ্ঞ প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘এই আন্দোলন এখন সাধারণ মানুষেরও।’’

খাবার নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

খাবার নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: সারমিন বেগম।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২৮
Share: Save:

রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে, সকাল গড়িয়ে দুপুর। এখনও স্বাস্থ্য ভবনের সামনেই বসে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। রাতে বৃষ্টি, দিনে চড়া রোদ— কিছুই দমাতে পারেনি তাঁদের। মঙ্গলবার রাত থেকেই আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ মানুষও। কেউ পৌঁছে দিয়েছেন শুকনো খাবার, জল, কেউ বা ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মাথা গোঁজার ছাউনির। এ ভাবেই রাতভর চলেছে অবস্থান। সকাল হতেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সাধারণের ভিড়। ডাক্তারদের আন্দোলনে দলে দলে এসে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তারদের সুরে সুর মিলিয়ে তাঁরাও জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত এক পা-ও কেউ নড়বেন না।

হাতে হাতে বিলি করা হচ্ছে শুকনো খাবার।

হাতে হাতে বিলি করা হচ্ছে শুকনো খাবার। ছবি: রিঙ্কি মজুমদার।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে ছ’দফা দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানে জুনিয়র ডাক্তারেরা। রাতে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাস থেকে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে অবস্থান মঞ্চে। আন্দোলনকারীদের সুবিধার্থে খুলে দেওয়া হয়েছে ক্যাম্পাসের শৌচাগারও। জোকার এক আবাসনের বাসিন্দারা আবার তৈরি করে ফেলেছেন ‘তিলোত্তমা ফান্ড’! সেখানকার এক আবাসিক রঞ্জনা বসু জানাচ্ছেন, তহবিলে সাধ্যমতো টাকা দিয়েছেন আবাসিকেরা। সেই টাকায় আন্দোলনকারীদের সকালের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে শুকনো খাবার, জলের বোতল পাঠিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ব্যবস্থা করা গিয়েছে অস্থায়ী বায়ো টয়লেটেরও।

জমেছে শুকনো খাবার, জল, ত্রিপল।

জমেছে শুকনো খাবার, জল, ত্রিপল। ছবি: সারমিন বেগম।

মাথা গোঁজার ছাউনি না থাকায় রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে অবস্থানে বসা চিকিৎসকদের। সকাল হতেই সে সমস্যারও সমাধান করা গিয়েছে। সাধারণ মানুষই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ত্রিপলের। সকালের খাবার নিয়ে এসেছেন বহু মানুষ। হাতে হাতে খাবার তুলে দিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও। কারও উৎসাহের কমতি নেই। সকলেই সোচ্চার হয়ে বলেছেন, ‘‘লড়ে যান! পাশে আছি।’’

শুকনো খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

শুকনো খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: সারমিন বেগম।

এত সমর্থন, সাহায্য পেয়ে আপ্লুত ডাক্তারেরাও। আন্দোলনকারী এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমরা মানুষকে জনসাধারণ বলছি না। বলছি ‘জন-অসাধারণ’! ওঁদের সমর্থন ছাড়া এই আন্দোলন ব্যর্থ হত। এই আন্দোলন আর শুধু ডাক্তারদের নেই। এই আন্দোলন সাধারণ মানুষেরও।’’ আন্দোলনকারী আর এক চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ বলছেন, ‘‘এখনও বাড়ি থেকে খাবার, জল নিয়ে আসছেন বহু মানুষ। তাঁরা যে ভাবে এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।’’

২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে অবস্থান। কিন্তু এখনও এক পা-ও নড়তে রাজি নন ডাক্তারেরা। তাঁদের দাবি, সদর্থক ভূমিকা দেখাচ্ছে না প্রশাসন। দাবি না মিটলে পথেই থাকবেন তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE