চালক ফিরহাদ হাকিম। সওয়ার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র
পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অভিনব কর্মসূচি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইলেকট্রিক বাইকে করে গেলেন নবান্নে। গন্তব্যে পৌঁছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং নরেন্দ্র মোদীকে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন স্টেডিয়ামের নাম বদল নিয়েও।
বৃহস্পতিবার হাজরা মোড় থেকে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ইলেকট্রিক বাইকের পিছনে বসে যাত্রা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর গলায় ঝোলানো ছিল জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ সংক্রান্ত পোস্টার। দুপুর ১২টা নাগাদ নবান্নে পৌঁছে যায় বাইক। সফরের সঙ্গে অন্য বাইকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা।
নবান্নের বাইরে দাঁড়িয়েই সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভোটের সময় এলেই বলে বেড়ান গ্যাস দেব। ওটা সত্যি সত্যি গ্যাস। মানে গ্যাস বেলুনোর মতো। কিন্তু সেই রান্নার গ্যাসের দাম ৮০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এটা ভাঁওতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আম জনতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন?’’
বুধবারই গুজরাতের মোতেরা স্টেডিয়ামের নাম পাল্টে প্রধানমন্ত্রীর নামে হয়েছে ‘নরেন্দ্র মোদী স্টে়ডিয়াম’। এই নিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘স্টেডিয়ামের নামও পাল্টে দিয়েছে। কোনওদিন হয়তো দেশের নামটাও পাল্টে দেবেন।’’ এই প্রসঙ্গেই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন মমতা।
যে ভাবে নবান্নে গিয়েছেন, ফিরবেনও সেই ইলেকট্রিক স্কুটারেই, নবান্নে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, আগেও প্রতিবাদ হয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনি নিজে শামিল হয়েছেন প্রতিবাদে। শুক্রবার থেকে আরও জোরালো প্রতিবাদে রাস্তায় নামবেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
এর আগেও একাধিক বার বাইকের পিছনে সওয়ার হতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় গ্রামে পুলিশ ঢোকা আটকাতে রাস্তা কেটে, রাস্তায় গাছ ফেলে গোটা এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন এলাকাবাসী। সেই সময় বাইকে করে নন্দীগ্রামে পৌঁছেছিলেন মমতা। এ ছাড়া জঙ্গলমহলে গিয়ে ছত্রধর মাহাতোর বাইকের পিছনে চড়েছেন মমতা। কিন্তু সেগুলি ছিল তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ আগে থেকে পরিকল্পনা করেই নির্ধারণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ট্রাফিক আইন মেনে, মাথায় হেলমেট পরে পুরো রাস্তা সফর করেন মুখ্যমন্ত্রী।
পেট্রল-ডিজেলের দাম প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে। তার সঙ্গে এ মাসেই তিন বার বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। অথচ গ্যাসে ভর্তুকি বাড়েনি। এ নিয়ে বরাবরই সরব তৃণমূল নেত্রী। প্রতিবাদ-আন্দোলনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভার কিছুটা লাঘব করতে সম্প্রতি জালানিতে ১ টাকা সেস কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy