বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ে পায়েল সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
ফের রাজনীতির ময়দানে পা রাখলেন টলিউডের আরও এক তারকা। বৃহস্পতিবার বিজেপি-তে যোগ দিলেন অভিনেত্রী পায়েল সরকার। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত থেকে হেস্টিংসে বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ে গেরুয়া পতাকা তুলে নেন তিনি। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডাও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্রী পায়েল নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে যে প্রকাশ্যে অত্যন্ত সরব, এমন বলা যায় না। তবে বৃহস্পতিবার কার্যত চমক জাগিয়েই বিজেপি শিবিরে যোগ দিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, পায়েল বিজেপি-তে যেতে পারেন, এমন একটা জল্পনা মাঝখানে বাতাসে ভাসছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে ওই বিষয়ে কোনও মহলেই কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি। বৃহস্পতিবার পায়েলের আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া থেকে পরিষ্কার যে, জল্পনা শুধুই জল্পনা ছিল না।
ঘটনাচক্রে, বুধবারই হুগলির সাহাগঞ্জের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। যাঁর সঙ্গে একটা সময় পায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। রাজ এমনিতে বরাবরই মমতা-ঘনিষ্ঠ হলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেননি। সেই ঘটনা ঘটেছে বুধবার। আর তার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পায়েলকে দলে নিল বিজেপি। যদিও দুই শিবিরেরই বক্তব্য— এ নিছক সমাপতন। এর মধ্যে সম্পর্ক থাকা বা ভাঙার কোনও সমীকরণ নেই। তবে তৃণমূল রাজকে কোনও আসনে টিকিট দেয় কি না, তা যেমন দেখার, তেমনই এটাও দেখার যে, বিজেপি পায়েলকে কোনও আসনে ভোটে লড়তে নামায় কি না। দুই শিবির থেকেই তেমন হলে বিধানসভা ভোট আরও রংদার হতে চলেছে। বস্তুত, টলি-জনতা আরও একধাপ এগিয়ে ভাবছে, কেমন হয় যদি রাজ-পায়েল বিরোধী শিবিরের হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোট লড়েন। তবে এসবই এখনও কল্পনার স্তরে।
বৃহস্পতিবার পায়েলের বিজেপি-তে যোগদান অভিনয় জগৎ থেকে তারকাদের রাজনীতিতে যোগদানের ধারাবাহিকতাকে আরও জোরাল করল। টেলিভিশন হোক বড় পর্দা— সম্প্রতি একের পর এক তারকাকে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক শিবিরে নাম লেখাতে। বস্তুত, রাজ্যের রাজনীতিতে এখন পেশাদার রাজনীতিকদের চেয়ে তাঁদের নিয়েই আলোচনা বেশি। জল্পনা চলছে, এঁরা কি যুযুধান দু’পক্ষের হয়ে ভোটে লড়বেন। নাকি নিছক প্রচারেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখবেন। তৃণমূল বরাবরই তারকাদের তাদের শিবিরে রেখেছে। পক্ষান্তরে, বিজেপি সেই পন্থা নিয়েছে বিধানসভা ভোটের আগে। তাদের শিবিরে রুদ্রনীল ঘোষ, ষশ দাশগুপ্তের মতো টালিগঞ্জের তারকারা যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যে তালিকায় জুড়ে গেল পায়েলের নাম। আবার তৃণমূলে ইতিমধ্যেই সাংসদ হিসাবে রয়েছেন দেব, নুসরত জাহান, মিমি চক্রবর্তীর মতো তারকারা। আগে থেকেই ছিলেন শতাব্দী রায়, তাপস পালেরা। এঁরা সকলেই ভোটে লড়ে সাংসদ হয়েছেন। এখন দেখার, বিজেপি তাদের শিবিরে নাম-লেখানো তারকাদেরও সেই পথে নিয়ে যায় কি না। নাকি এ শুধুই তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা টানার প্রতিযোগিতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy