পানায় ভরে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
সেজে উঠছে শহর। অথচ কেষ্টপুর খাল সংস্কারের অভাবে দুয়োরানির মতোই রয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ কাল ধরে সেই ছবিতেই অভ্যস্ত বাসিন্দারা।
বাম আমলে কেষ্টপুর খাল দিয়ে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণের পরিকল্পনা ছিল। কয়েক বার চেষ্টা হলেও তা সফল হয়নি। সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনাও ছিল। বর্তমান রাজ্য সরকারও কেষ্টপুর খালের সৌন্দর্যায়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কয়েক বছর পার করেও সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল না।
পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কয়েক বছর আগে কেষ্টপুর খালের সৌন্দর্যায়নের কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রাথমিক ভাবে কেষ্টপুর খালের দু’কিলোমিটার অংশ জুড়ে কাজ হওয়ার কথা ছিল। খালের সল্টলেকের অংশে গাছ-গাছালি অক্ষত রেখে গঙ্গার পাড়ের মতোই সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা হয়েছিল। বাসিন্দাদের হাঁটাচলার রাস্তা, ভাস্কর্য, বিনোদনের ব্যবস্থার কথা ছিল। এখানেই শেষ নয়, কেষ্টপুর খালের ভিআইপি রোড অংশে লন্ডন আইয়ের ধাঁচে কলকাতা আইয়ের পরিকল্পনাও রয়েছে। কথা ছিল ভিআইপি রোডের ধারে কলকাতায় প্রবেশপথে একটি সুদৃশ্য তোরণ তৈরিরও। কিন্তু এতটুকুও বদলায়নি খালের অবস্থা।
বাম আমলে লঞ্চ থামার জন্য কয়েকটি জেটিও তৈরি হয়েছিল। সেগুলির আজ বেহাল দশা। খালের পাড়ে একাধিক জায়গায় ঝুপড়ি তৈরি হয়েছে। রয়েছে নানা দখলদারিও। সল্টলেক থেকে রাজারহাটের দিকে একাধিক জায়গায় খালের জলের প্রবাহ কমে গিয়েছে। আবর্জনা জমে রয়েছে। সেই ময়লা এবং তার জেরে কটূ গন্ধে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। কেষ্টপুরের বাসিন্দা সীমা সরকার বলেন, ‘‘এক দিকে মশার উপদ্রব, অন্য দিকে গন্ধে টেকা দায়। অবিলম্বে খাল সংস্কার করতে হবে।’’ একই অভিযোগ সল্টলেকবাসীদেরও। বিশেষত বৈশাখী থেকে নয়াপট্টি এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশের অভিযোগ, সৌন্দর্যায়ন তো দূর অস্ত্, নিয়মিত সংস্কারও হয় না।
কেন আটকে রয়েছে কেষ্টপুর খালের সৌন্দর্যায়নের কাজ?
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, পরিকল্পনা তৈরি। কিন্তু রাজারহাট-নিউটাউনে জলপ্রকল্পের জন্য কেষ্টপুর খালের তলা থেকে পাইপ পাতার কাজ চলছে। ফলে এই সময়ে সংস্কার কিংবা সৌন্দর্যায়নের কাজ করা যাবে না। তাতে দু’টি প্রকল্পই বাধা পাবে। আগে জলপ্রকল্পের কাজ করা হবে। তার পরে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। জলপ্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। বাসিন্দাদের প্রশ্ন আর কিছু দিন বাদেই এই এলাকায় পুর-নির্বাচন। এর পরে বিধানসভার নির্বাচন। ফলে সৌন্দর্যায়নের কাজ কবে শুরু হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেল।
যদিও সংশয় উড়িয়ে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কেষ্টপুর খাল নিয়ে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। রাজারহাট-নিউটাউনের জলপ্রকল্পের কাজ চলায় দেরি হচ্ছে। তা ছাড়া সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নে একাধিক দফতর জড়িত। সকলকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব সেই কাজ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy