Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

বস্তিতে করোনা রোগী, ধুন্ধুমার দমদম রোডে

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগেই। ওই বস্তিরই বাসিন্দা উত্তর কলকাতার এক চিকিৎসকের গাড়িচালকের সম্প্রতি জ্বর আসে।

জমায়েত: গোলমালের পরে ভিড় করে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার, দমদম রোডের মরিচঝাঁপি বস্তিতে। নিজস্ব চিত্র

জমায়েত: গোলমালের পরে ভিড় করে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার, দমদম রোডের মরিচঝাঁপি বস্তিতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

করোনা রোগী কেন এখনও বস্তিতে? তাঁর খোঁজে পরিজনেদের প্রশ্ন করতে গিয়েছিলেন কয়েক জন প্রতিবেশী। এর পরেই শুরু হয় ব্যাপক গন্ডগোল। যার জেরে বুধবার সকালে কলকাতা পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ১৮ নম্বর দমদম রোডের মরিচঝাঁপি বস্তিতে দু’পক্ষের মারামারি হয়। গোলমালে মাথা ফাটে দু'জনের। আরও কয়েক জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চিৎপুর থানার পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় চার জন গ্রেফতার হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগেই। ওই বস্তিরই বাসিন্দা উত্তর কলকাতার এক চিকিৎসকের গাড়িচালকের সম্প্রতি জ্বর আসে। স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর গৌতম হালদারের দ্বারস্থ হলে যুবকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে গত সোমবার জানান তিনি। এর পরেই বস্তির বাসিন্দাদের একটি অংশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁদের ক্ষোভ, জ্বর হওয়ার পরেও ওই যুবক কেন এত দিন পাড়ায় থাকলেন? এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে করোনা আক্রান্ত ওই যুবক আচমকা বেপাত্তা হয়ে যান বলে স্থানীয়দের দাবি।

তিনি কোথায় আছেন জানতে এ দিন তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন বস্তিরই কয়েক জন। অভিযোগ, তখনই যুবকের পরিজন ও প্রতিবেশী উভয় পক্ষের বচসা শুরু হয়। শেষে তা গড়ায় হাতাহাতিতে। কৃষ্ণ বৈদ্য নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ছেলেটা কোথায়, সেটাই জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। কারণ, ওর পরেই পাড়ার আরও কয়েক জনের জ্বর হয়েছে। অথচ উত্তর না দিয়ে আমাদেরই ধাক্কা মেরে ফেলে ওরা ইট ছুড়তে থাকে।’’ এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ‘‘বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ মারামারির জেরে দমদম রোডের একাংশ বন্ধ হয়ে যায়। গাড়ির লম্বা লাইন চলে যায় চিড়িয়ামোড় পর্যন্ত। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে।’’

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, যে যুবককে ঘিরে এই গোলমাল, তাঁর বস্তির ঘর গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দিয়েছে পুলিশ। ওই যুবকের মায়ের দাবি, ‘‘ছেলের জ্বর ছিল। কিন্তু করোনা নয়। এখান থেকে তুলে দেওয়ার জন্য মিথ্যে বলা হচ্ছে। গৌতমবাবুর এই চক্রান্তে সাহায্য করছে স্থানীয়েরা।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘পাড়া ছাড়া’ করানোর চক্রান্তে ভাগের মিটার ঘর থেকে মাঝেমধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, কলে তাঁরা জল নিতে গেলেও টিটকিরি করা হচ্ছে।

তিনি ফের দাবি করেন, ‘‘বলা হচ্ছে আমাদেরও করোনা হয়েছে। পরীক্ষা করিয়ে দেখেছি আমরা সুস্থ।’’ যদিও সেই রিপোর্ট দেখাতে পারেননি তিনি।

ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর গৌতমবাবু যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘আমি মিথ্যে বলতে যাব কেন? পুরসভার কাছে ওই যুবকের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট রয়েছে। থানার কাছেও আছে।’’ চিৎপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিকের আবার বক্তব্য, ‘‘এক যুবকের করোনা হয়েছে। তবে এ দিনের মারামারি সেটা নিয়ে নয়।’’ তা হলে কি নিয়ে। উত্তর দেননি ওই পুলিশ আধিকারিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Dum Dum Road Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy