দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশকর্মীরা পৌঁছেছিলেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু তাঁরা ছিল সংখ্যায় ছিলেন অপ্রতুল। থানার আধিকারিকেরা জানতেও পারেননি, হাতে গোনা ওই পুলিশকর্মীদের সুযোগ নিয়ে ব্যপক তাণ্ডব চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, ওই পুলিশকর্মীরা অবস্থা বুঝতে গিয়ে সঠিক সময়ে বড় বাহিনী পাঠানোর অনুরোধ করেননি থানায়। ফলে থানা জানতেও পারেনি ঘটনার গুরুত্ব। দক্ষিণ শহরতলির ওই ঘটনার পরে অভিযোগ উঠেছিল, থানা আধিকারিকদের অবস্থা বুঝতে দেরি হওয়াতেই দুষ্কৃতী-তাণ্ডবে মৃত্যু হয়েছিল এক জনের।
লালবাজার সূত্রের খবর, পুলিশের এ ধরনের গাফিলতি আটকাতে এ বার চালু হচ্ছে নয়া ব্যবস্থা। থানার আধিকারিকেরা যাতে ঘটনাস্থলের চিত্র সরাসরি দেখতে পান, সে জন্য তাঁদের মোবাইলের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে এলাকার সিসিটিভি। যাতে ঘটনাস্থলে না থাকলেও নিজের থানা এলাকায় নজরদারি চালাতে পারেন ওসি। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘চলতি মাসেই ওই ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বেশ কয়েকটি ডিভিশনে গিয়ে বৈঠক করে পুলিশ আধিকারিকদের ওই নির্দেশ দিয়েছেন।’’ এর আগে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ গার্ডের ওসিদের মোবাইলে ওই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশকর্তাদের দাবি, ওই ব্যবস্থা চালু হলে কলকাতা পুলিশের আওতাধীন ৭০টি থানার ওসি এবং এসিরা অফিসে বসে বা রাস্তায় থেকে মোবাইলে তাঁদের এলাকার সিসিটিভি-র ছবি দেখতে পাবেন। সমস্যা হলে চটজলদি নির্দেশও দিতে পারবেন। এতে ঘটনাস্থলে থাকা অফিসার ও কর্মীদের ফাঁকি দেওয়া বন্ধ করা যাবে বলে দাবি পুলিশকর্তাদের। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি-র ফুটেজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৌঁছবে ওসিদের স্মার্ট ফোনে। তাতে নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে ছবি দেখা যাবে। তবে প্রত্যেক আধিকারিক শুধু নিজের এলাকার ছবি দেখতে পাবেন।
লালবাজার জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশ এলাকার সাতশো জায়গায় ষোলোশোর বেশি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওই সব জায়গার ছবি পুলিশ কমিশনার-সহ শীর্ষ কর্তাদের ঘর থেকে দেখা যেত। সেই সঙ্গে সিসিটিভি-র ফুটেজে নজর রাখা হতো লালবাজারের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম, ট্রাফিক গার্ড এবং ডিভিশনার ডিসিদের অফিস থেকেও। তবে থানার ওসি বা এসিদের কন্ট্রোল রুম বা অফিসারদের উপরে নির্ভর করে থাকতে হতো। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে ওসিরা নিজেদের মতো করে সব জায়গার ছবি দেখতে পাবেন। ঘটনার গুরুত্ব বোঝার জন্য কারও উপরে তাঁদের নির্ভর করতে হবে না বলে আশা কলকাতা পুলিশের কর্তাদের।
পুলিশ সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক পুলিশের ওই সিসিটিভি-র বাইরে শহরে প্রায় সতেরোশো জায়গায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে, যা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। থানার আধিকারিকেরা যাতে সেগুলির ফুটেজও দেখতে পান, এখন সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন লালবাজারের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy