Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

হোটেলের ঘরে ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ

উৎসবের দেহ উদ্ধারের পরে পুলিশ ওই হোটেলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ওই যুবক এসে নিজের আধার কার্ড দেখিয়ে হোটেলের ঘর নেন। রবিবার সকালে হোটেলের এক কর্মী ওই যুবককে ডাকতে গিয়ে কোনও সাড়া পাননি।

এই ঘরেই উদ্ধার হয় উৎসবের দেহ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

এই ঘরেই উদ্ধার হয় উৎসবের দেহ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

হোটেলের ঘরে ফ্যান থেকে ঝুলছে এক যুবকের দেহ। টেবিলে রাখা দু’টি আলাদা কাগজে হিন্দিতে লেখা দু’টি ‘সুইসাইড নোট’। একটিতে বলা হয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’ দ্বিতীয় চিঠিটি লেখা হয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে। তাতে লেখা, ‘‘আপনাদের এই ঘরটি এ ভাবে ব্যবহার করার জন্য দুঃখিত। রুম ভাড়া এবং খাবারের দাম বাবদ টাকাটা রেখে গেলাম।’’ সেই কাগজের সঙ্গে রাখা ২০০০ টাকার পাঁচটি নোট!

রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শেক্সপিয়র সরণি থানার ৬/৩এ এজেসি বসু রোডের একটি হোটেলে। পুলিশ জানায়, সেখানকার ২০১ নম্বর ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া দেহটি উৎসব খুল্লার (৩৫)। পুলিশ জেনেছে, পেশায় ব্যবসায়ী ওই যুবকের বাড়ি জামশেদপুরের বিষ্টুপুর থানা এলাকায়। এ শহরে এসেছিলেন নিজের ব্যবসার কাজে।

উৎসবের দেহ উদ্ধারের পরে পুলিশ ওই হোটেলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ওই যুবক এসে নিজের আধার কার্ড দেখিয়ে হোটেলের ঘর নেন। রবিবার সকালে হোটেলের এক কর্মী ওই যুবককে ডাকতে গিয়ে কোনও সাড়া পাননি। বারবার দরজা ধাক্কা দিয়ে, ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া না মিললে শেষে বিকল্প চাবি দিয়ে দরজা খুলে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। এর পরেই হোটেল কর্তৃপক্ষ খবর দেন শেক্সপিয়র সরণি থানায়। পুলিশ এসে যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

হোটেল থেকে পাওয়া নথি দেখে পুলিশ এর পরে ঝাড়খণ্ডের বিষ্টুপুর থানার আইসি-র নম্বর জোগাড় করে ঘটনাটি জানায়। ওই যুবকের নাম জানিয়ে তাঁর বাড়ির খোঁজ করতে বলা হয়। এর পরেই বিষ্টুপুর থানা ওই ব্যবসায়ী যুবকের বাড়িতে খবর পাঠায় এবং পরে মৃত যুবকের এক আত্মীয় ফোন করে পুরো বিষয়টি জেনে কলকাতা রওনা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, উৎসব খুল্লার এক খুড়তুতো ভাই জানিয়েছেন, ব্যবসার কাজ নিয়ে শনিবার সকালেই জামশেদপুর থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বিষ্টুপুরে দীর্ঘদিনের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেই ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। এমনকী, জামশেদপুরের এক ইস্পাত সংস্থার সঙ্গে গাঁটছাড়া বেঁধে তাঁদের পারিবারিক যে একটি ব্যবসা চলত, সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ব্যবসার কাজে মন্দা দেখা দেওয়ায় চারদিকে প্রচুর দেনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন উৎসবের ভাই।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, উৎসব ব্যবসার কোনও কাজ নিয়েই শনিবার কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু সেই কাজেও কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। এর পরেই হোটেলে ঢুকে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই যুবক। উৎসবের বাড়িতে বাবা-মা রয়েছেন। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

hanging body hotel murder Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE