ছবি এএফপি।
বিভিন্ন রুটের বেসরকারি বাসে উঠলেই দিতে হচ্ছে নিদেন পক্ষে ১০ টাকা। দূরত্ব আর একটু বেশি হলেই সেটা গিয়ে ঠেকছে ১৫-২০ টাকায়। ভিআইপি রোড সংলগ্ন বিভিন্ন রুটে ন্যূনতম ন’টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে বাসমালিক সংগঠন সূত্রের খবর। নাগেরবাজার, দমদমের রুটগুলিতে সব চেয়ে কম ভাড়া ১০ টাকা। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন রুটের বাসেও যথেচ্ছ বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বেহালা, তারাতলা, বজবজ, সোনারপুর, বারুইপুরে বিভিন্ন রুটের বাসের ন্যূনতম ভাড়া ১০ থেকে ১২ টাকা। আন্তঃজেলা এবং জেলার অভ্যন্তরীণ বেসরকারি বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া লাগছে।
দফায় দফায় ডিজ়েলের দাম বাড়ায় বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল বিভিন্ন বাসমালিক সংগঠন। করোনা আবহে যাত্রী কমে যাওয়ার সমস্যাও ছিল। তবে বাসমালিক সংগঠনের আন্দোলন সত্ত্বেও সরকার ভাড়া বৃদ্ধির দাবি মানেনি। তা সত্ত্বেও প্রায় সর্বত্রই বেসরকারি বাস-মিনিবাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। শুরুতে কিছুটা লুকোছাপা থাকলেও বাসমালিকেরা এখন বেশি ভাড়া নেওয়াটাকে নিয়মে পরিণত করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ। কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও স্থানীয় ভাবে নিজেদের মতো করে ভাড়া স্থির করে তা আদায় করছেন বাসমালিকেরা।
বাসের ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকার জুনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছিল। সেই কমিটি রিপোর্ট দিলেও অতিমারির জন্য সরকার ভাড়া বাড়াতে রাজি হয়নি। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই চলছে বাড়তি ভাড়া আদায়। বিভ্রান্তি আর ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রীদের।
কেন এটা হচ্ছে? বাসমালিকদের একাংশ মেনে নিচ্ছেন, জোরাজুরি না-করলেও বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যদিও বাসমালিক সংগঠনের নেতারা বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ সরাসরি স্বীকার করছেন না। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া বাসে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু বাসমালিকদের অবস্থা খুব সঙ্গিন। কেন্দ্র বা রাজ্য, কেউই পরিবহণ শিল্পের স্বার্থে উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি। তারই মধ্যে রুট বাঁচিয়ে রাখতে রাস্তায় বাস নামাতে হচ্ছে।’’ ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু জানান, এখনও বাসে পর্যাপ্ত যাত্রী নেই। শহরে দিনে প্রায় আড়াই হাজার বেসরকারি বাস-মিনিবাস চলছে। ক্ষতি সামলে পরিষেবা সচল রাখার চেষ্টা করছেন সকলেই। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের টিটো সাহা বলেন, ‘‘বাসমালিকেরা তেলের টাকা তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন। সরকারি কর ছাড়ের প্রকল্পে সকলের সুরাহা হয়নি। ব্যাঙ্ক কিস্তির টাকা দাবি করছে।’’
মেট্রো চালু হওয়ার পরে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগম থেকে যে-সব অতিরিক্ত বাস কলকাতায় চালানো হচ্ছিল, ধাপে ধাপে সেগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে বেসরকারি বাসে কিছুটা হলেও যাত্রী বাড়ছে। কিন্তু বাসযাত্রীদের অভিযোগ, বেসরকারি বাসের উপরে যাত্রীদের নির্ভরতা বাড়লেও সরকারি নজরদারি নেই। সোনারপুরের বাসিন্দা নিত্যযাত্রী সুজিত মণ্ডল মধ্য কলকাতার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘এক-একটি রুটে এক-এক রকম ভাড়া। কাজের প্রয়োজনে বাসে না-চড়লেই নয়। ফলে যে যা চাইছে, সেই ভাড়াই দিয়ে যেতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy