Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

কতটা ক্ষতিগ্রস্ত, মাপকাঠি সেতু-স্বাস্থ্য যাচাইয়ের ফর্মেই

উল্লেখযোগ্য ভাবে ওই রিপোর্টে উল্লিখিত সেতু-উড়ালপুলের মাপকাঠিই শুরু হচ্ছে ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ দিয়ে। সেতুর অবস্থা কেমন, তা জানাতে ‘মাইনর ড্যামেজড’, ‘মডারেটলি ড্যামেজড’ ও ‘সিভিয়ারলি ড্যামেজড’—এই তিনটি কলাম রাখা হয়েছে।

মাঝেরহাট উড়ালপুল-এ ভাঙন। ফাইল চিত্র।

মাঝেরহাট উড়ালপুল-এ ভাঙন। ফাইল চিত্র।

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

প্রয়োজনে যান চলাচল বন্ধ করে আপৎকালীন ভিত্তিতে ‘খারাপ’ সেতু সারানোর নির্দেশ ছিল। নির্দেশ ছিল, সেতু মেরামতির জন্য যা যা কিছু করা দরকার, ‘অবিলম্বে’ তা করতে হবে। খোদ পূর্ত দফতরের সচিব গত জুলাইয়ে এই নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন পদস্থ কর্তাদের। কিন্তু সেই নির্দেশ মেনে চলা হয়েছিল কি না, মাঝেরহাট সেতু ভাঙার ঘটনার পর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সরকারি মহলেই।

প্রশ্ন রয়েছে আরও। কারণ, রাজ্যের কোন সেতু-উড়ালপুলের অবস্থা কেমন, তা সবিস্তার জানাতে দফতরের কর্তা-ইঞ্জিনিয়ারদের রিপোর্ট-কার্ডও পাঠিয়েছিল দফতর। সেখানে সেতু-উড়ালপুলের নাম, স্থান, জেলা, নির্মাণকারী ডিভিশনের নাম, সমীক্ষার তারিখ-সহ একাধিক বিষয় জানাতে বলা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য ভাবে ওই রিপোর্টে উল্লিখিত সেতু-উড়ালপুলের মাপকাঠিই শুরু হচ্ছে ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ দিয়ে। সেতুর অবস্থা কেমন, তা জানাতে ‘মাইনর ড্যামেজড’, ‘মডারেটলি ড্যামেজড’ ও ‘সিভিয়ারলি ড্যামেজড’—এই তিনটি কলাম রাখা হয়েছে। একটি কলাম বরাদ্দ রয়েছে ‘ভাল’ সেতুর জন্য। দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মতে, সমীক্ষা-কার্ডে এমন কলামের উল্লেখ তাঁরা আগে দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। ফলে সেতুগুলির বর্তমান ‘অবস্থা’ সম্পর্কে দফতরের কর্তাদের ধারণা কী ছিল, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট বলে অনেকেরই মত।

দফতর সূত্রের খবর, গত জুলাইয়েই সেই রিপোর্ট জমা দিতে এবং তার ভিত্তিতে দ্রুত সংস্কারের কাজও শুরুর কথা ছিল। দফতর এও জানত যে, সার্বিক সংস্কারের কাজ হলে ব্যস্ততম উড়ালপুল-সেতু বন্ধ রাখতে হবে। তাই সংস্কারের প্রয়োজনে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ ছিল। কিন্তু দু’একটি বিক্ষিপ্ত কাজ হয়ে থাকলেও সার্বিক সংস্কারের কাজ কোনও জায়গাতেই হয়নি বলে দফতর সূত্রের খবর।

পূর্ত সচিবের সেই নির্দেশের প্রতিলিপি।

ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে, এটা কি চূড়ান্ত গাফিলতি নয়! সেতু-উড়ালপুলের অবস্থা কেমন, দু’মাস আগেই তা পরিদর্শন করা এবং সে অনুযায়ী দ্রুত সংস্কারের কথা বলা সত্ত্বেও আদতে কী করা হয়েছিল? ওই রিপোর্ট কি জমা প়ড়েছিল? জমা পড়লে সংস্কারের কাজ কি হয়েছিল? কতটা হয়েছিল? এ বিষয়ে পূর্ত সচিব অর্ণব রায়কে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত উত্তর দেননি এসএমএসেরও। তাঁর দফতরে ফোন করা হলে বলা হয়, ‘‘তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত। পরে ফোন করুন।’’

সেতু-উড়ালপুলের রিপোর্ট কার্ডের প্রতিলিপি।

আরও পড়ুন:জিজ্ঞাসার মুখে সরকারি কর্তারা​

দফতরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, দু’বছর আগে রাজ্য জুড়ে সেতু-উড়ালপুলের এমন সমীক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাময়িক মেরামতি করা হয়েছিল মাত্র। দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘শুধু রিপোর্ট-কার্ড পাঠিয়ে নির্দেশ দিলেই তো আর হবে না। সেই অনুযায়ী কাজটা তো করতে হবে। কাজ না হলে রিপোর্টে কী পাঠানো হল, তার কোনও গুরুত্ব থাকে না কি!’’

আরও খবর: মেট্রোর কাজ বন্ধে ক্ষুব্ধ রেল

অন্য বিষয়গুলি:

Check-up health Flyover Report card PWD
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE