শোকার্ত: কেষ্টপুরের বাড়িতে মহম্মদ দিলশাদের (ইনসেটে) বাবা মহম্মদ রফিক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
সুইমিং পুলে স্নান করতে নেমে মৃত্যু হল এক ছাত্রের। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার হেদুয়া পার্কে। মৃত ছাত্রের নাম মহম্মদ দিলশাদ (২২)। তাঁর বাড়ি আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুপুরে ৮-৯ জন বন্ধুর সঙ্গে হেদুয়া পার্কের রেলিং টপকে সুইমিং পুলে স্নান করতে নামেন দিলশাদ। কিন্তু তাঁরা কেউই সাঁতার জানতেন না। স্থানীয়েরা জানান, দিলশাদকে জলে তলিয়ে যেতে দেখে বন্ধুরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের চিৎকারে অনেকেই ছুটে যান। খবর পেয়ে পৌঁছন পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। নামানো হয় ডুবুরি। বিকেল ৪টে নাগাদ সুইমিং পুল থেকে দিলশাদকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নারকেল়ডাঙার একটি হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র দিলশাদেরা চার ভাই এবং তিন বোন। বাবা মহম্মদ রফিক কেষ্টপুরের কাছে একটি কারখানায় কাজ করেন। সন্ধ্যায় দিলশাদের বাড়ি গিয়ে তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি রবিবার দুপুরে বন্ধুদের সঙ্গে ময়দানে ফুটবল খেলতে যেতেন দিলশাদ। এ দিনও তেমনই বেরিয়েছিলেন। বিকেলে দিলশাদের এক বন্ধুই ফোন করে ঘটনার কথা জানান। রফিক বলেন, ‘‘শুনলাম দিলশাদ জলে ঝাঁপ দিয়েছে। তার পরে আর ওঠেনি। ও তো সাঁতার জানত না। তা হলে হঠাৎ জলে ঝাঁপ দেবে কেন?’’ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে দিলশাদের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
হেদুয়ার সুইমিং পুলে দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০১৬ সালের ৩১ মে সাঁতার কাটার সময়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল রামতনু বসু লেনের বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী সঙ্গীতা দাসের। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই ঘটনায় প্রশিক্ষকদের গাফিলতি খুঁজে পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সঙ্গীতার দাদা সন্দীপ দাস জানান, তাঁর বোনের মৃত্যু সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন। তাঁর দাবি, ‘‘হেদুয়ার নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোয় ঘাটতি রয়েছে।’’
এই দুর্ঘটনার পরে ফের হেদুয়ার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রেলিং টপকে দিলশাদেরা কী ভাবে ঢুকলেন সেই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। যদিও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর মীনাক্ষী গুপ্ত বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন ওই পার্কে। অনেকেই তাঁদের এড়িয়ে জোর করে ঢুকে যান। কী ভাবে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো যায়, তা নিয়ে সোমবারই সাঁতার ক্লাবগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy