Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

আতঙ্কের সঙ্গেই তৈরি হচ্ছে ক্ষোভ

নতুন করে কোনও বাড়ি চিহ্নিতও করেননি খালি করার জন্য। কিন্তু তার পরেও দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেন সংলগ্ন গৌর দে লেন ছেড়ে চলে যাওয়া বাসিন্দাদের আতঙ্ক এখনও কাটেনি।

সম্বল: বাড়ি থেকে জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসছেন সেকরাপাড়ার বাসিন্দারা। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ

সম্বল: বাড়ি থেকে জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসছেন সেকরাপাড়ার বাসিন্দারা। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

নতুন করে কোনও বাড়ি ভেঙে পড়েনি। শুক্রবার মেট্রো কর্তৃপক্ষ

নতুন করে কোনও বাড়ি চিহ্নিতও করেননি খালি করার জন্য। কিন্তু তার পরেও দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেন সংলগ্ন গৌর দে লেন ছেড়ে চলে যাওয়া বাসিন্দাদের আতঙ্ক এখনও কাটেনি।

ওই বাসিন্দাদের অনেকেই পৈতৃক বাসস্থান ছেড়ে হোটেলে যেতে চাননি। কিন্তু উপায় ছিল না। তাঁদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন— মাটির নীচে সুড়ঙ্গে যে জল ঢুকেছিল, তা মেট্রো কর্তৃপক্ষ (কেএমআরসিএল) আটকাতে পেরেছেন কি? নতুন করে আর কোনও এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি?’’ ওই পাড়ার বাসিন্দা দেবাশিস দে-র বাড়িটি ১৫০ বছরের পুরনো। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এখনও মেট্রোকর্তারা কিছু বলেননি। কিন্তু পাশের বাড়িতে ফাটল ধরেছে। জানি না, আমাদের কী হবে।’’

মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিন নতুন করে আর কোনও বাড়ি খালি করার নোটিস দেননি। তাঁরা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে গৌর দে লেনের যে ক’টি বাড়ি খালি করতে বলা হয়েছিল, তার মধ্যে চারটি বাড়ির বাসিন্দাদের বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে সরিয়ে

দেওয়া হয়েছে। বাকি বেশ কয়েকটি বাড়িতে ছোটখাটো চিড় বা ফাটল ধরেছে। সেই সমস্ত বাড়ির বাসিন্দারা এ দিন দুপুরে জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ির জায়গা মাপজোক করে তা লিখিত আকারে দিলে তবেই তাঁরা বাড়ি ছাড়বেন। কেএমআরসিএল জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ৭৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি হয়েছে। তবে নতুন করে কোনও বাড়িতে ফাটল দেখা দিলে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই তাদের তরফে জানানো হয়েছে।

এ দিকে, শুক্রবারও সকাল থেকে স্লিপ হাতে নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের। স্লিপ নিয়ে কোনও ভাবে যদি বাড়িতে ঢুকে জরুরি জিনিসগুলি বার করে আনা যায়। তবে সেখানেও বাসিন্দাদের গলায় ঝরে পড়েছে ক্ষোভ। যেমন, নয় নম্বর সেকরাপাড়া লেনের বাসিন্দা মমতা সেন চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ সংলগ্ন একটি হোটেল থেকে এসে সকালেই মেয়ের সঙ্গে হাতে স্লিপ নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন লাইনে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও তাঁদের ডাকা হয়নি। এক সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মমতা। জানান, রবিবার বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। কোনও পরিচয়পত্রও আনতে পারেননি।

মমতার কথায়, ‘‘এক-একটি পরিবারের একাধিক সদস্য স্লিপ নিয়ে কাগজপত্র বার করার নামে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, এমনকি খেলনাও বার করে আনছেন। পুলিশ বলছে, একটি পরিবারের জিনিস বার করা শেষ হলে তবেই অন্য পরিবার ঢুকতে পারবে। এর ফলে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।’’ এরই মধ্যে অনেকে বার করে এনেছেন জিনিসপত্র। কেউ কেউ গ্যারাজ থেকে গাড়িও বার করতে পেরেছেন এ দিন। তবে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা, যাঁরা নিজেদের কোনও পরিচয়পত্র বা ব্যাঙ্কের কোনও কাগজপত্রই বার করে আনতে পারেননি। উল্টে বাড়িও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy