মহাকরণে বোমার খোঁজে পুলিশ কুকুর। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র।
আচমকা বোমাতঙ্কে কেঁপে গেল মহাকরণ। যার জেরে বেলা সাড়ে তিনটে থেকে সাড়ে পাঁচটা অবধি মহাকরণের ভিভিআইপি ব্লকে তন্নতন্ন করে বোমার খোঁজে তল্লাশি চালাল বম্ব স্কোয়াড এবং পুলিশ কুকুরের একটি দল। ভাঙা মহাকরণে সে সময়ে একমাত্র বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত ছাড়া কোনও মন্ত্রী ছিলেন না। তবে কয়েক জন উচ্চপদস্থ কর্তা ছিলেন। যদিও তল্লাশির পরে কোনও বোমা মেলেনি। পরে কলকাতা পুলিশ তদন্ত করে দেখে, বোমা রেখে দেওয়ার খবরটি সম্পূর্ণ ভুয়ো।
লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্রের কাছে একটি ই-মেল মারফত খবর আসে, মহাকরণে বোমা রাখা আছে। ২০১৩ সালে মহাকরণ সংস্কারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ রাজ্যের সদর কার্যালয় উঠে গিয়েছে নবান্নে। স্বভাবতই নিরাপত্তার নিরিখে এখন মহাকরণের গুরুত্ব অনেকটাই কমে গিয়েছে। বেশির ভাগ মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দফতরও নবান্ন বা অন্যত্র সরে গিয়েছে। শুধু গুটিকয়েক মন্ত্রী-আমলার ঘর এবং দফতর রয়ে গিয়েছে মহাকরণে।
তবুও বোমা রাখার হুমকি পাওয়ার পরে কোনও ঝুঁকি নেয়নি লালবাজার। মিনিট পনেরোর মধ্যে বম্ব স্কোয়াড, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি বড় দল কোকো এবং হানি নামের দুই পুলিশ কুকুরকে নিয়ে মহাকরণে এসে দু’টি দলে ভাগ হয়ে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে দেয়। কিছুক্ষণ পরেই বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তের সঙ্গে কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে আচমকা পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি দেখে থতমত খেয়ে যান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব। পুলিশের দলটিকে আচমকা তল্লাশির কারণও জানতে চাওয়া হয়। যদিও পুলিশ সূত্রে এটি ‘রুটিন তল্লাশি’ বলে দাবি করা হয়। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘অযথা আতঙ্ক যাতে না ছড়ায়, সে জন্য বোমা রেখে দেওয়ার খবরটি গোপন রাখা হয়েছিল।’’
নীচের লাইব্রেরি থেকে শুরু করে একে একে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস, আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা দাশগুপ্ত, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র-সহ ছোট-বড় সব আধিকারিকের ঘর ও দফতরগুলিতে তল্লাশি চালানো হয়। যদিও দু’ঘণ্টার তল্লাশি শেষে সন্দেহজনক কিছুই মেলেনি। সন্ধ্যায় রাজীব মিশ্র বলেন, ‘‘তদন্তে আমরা জেনেছি, ই-মেলটা ভুয়ো ছিল। যেখান থেকে মেলটি এসেছে, তার খোঁজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy