Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
BJP

সকাল থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় রইল নবান্ন

জীবাণুনাশের কর্মসূচি থাকলে আগে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে যেতেন না। তবে এ দিন হঠাৎই নবান্নে পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়।

বিজেপি যুব মোর্চার মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা পুলিশের। ছবি পিটিআই।

বিজেপি যুব মোর্চার মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা পুলিশের। ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০১:৫৫
Share: Save:

বিজেপি যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা গোয়েন্দাদের আগে থেকেই ছিল। সেই মতোই ছিল পুলিশি প্রস্তুতি। তবে বৃহস্পতিবার ওই কর্মসূচির আগে থেকেই নবান্ন সংলগ্ন এলাকাকে কার্যত নজিরবিহীন নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হয়।

এ দিন সকাল থেকেই নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে নিরাপত্তার বাঁধন আরও আঁটোসাঁটো করে প্রশাসন। নবান্নের নিরাপত্তার জন্য সাধারণ দিনের মতো নিরাপত্তারক্ষীরা ছাড়াও কলকাতা পুলিশ, আরএএফ, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে নবান্নগামী রাস্তার মুখে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। ওই পথে যেতে চাওয়া সাধারণ যাত্রীদের দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। কিন্তু তাঁদের নবান্নের দিকে যেতে দেওয়া হয়নি।

জীবাণুনাশের কর্মসূচি থাকলে আগে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে যেতেন না। তবে এ দিন হঠাৎই নবান্নে পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। সওয়া ২টো নাগাদ নবান্নে পৌঁছলেও তিন-চার মিনিটের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী সেখান থেকে বেরিয়ে সরাসরি চলে যান ভবানীভবনে। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব বা রাজ্য পুলিশের ডিজির মতো প্রশাসনিক কর্তারা এ দিন নবান্নে যাননি। তাঁরা প্রত্যেকেই ভবানী ভবনে থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছিলেন। তবে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংহ সেই সময়ে নবান্নে ছিলেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: মিছিলে রুদ্ধ পথে ভোগান্তি, হেঁটেই গন্তব্যে

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন নবান্নের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও। তাঁদের আটকে দেওয়া হয় দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে নবান্নগামী রাস্তার মুখে থাকা ড্রপ-গেটের সামনেই। তার পরেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা নবান্নের কাছাকাছি পৌঁছতে চাইলে পুলিশকর্তারা এসে তাঁদের না যাওয়ার অনুরোধ করেন। বস্তুত, এ দিন জীবাণুনাশের কাজের জন্য নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বুধবারই জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তার জন্য নবান্নের অত আগে থেকে সংবাদমাধ্যমকে কেন আটকে দেওয়া হল, তার সদুত্তর এ দিন প্রশাসনের তরফে মেলেনি। পুলিশ মহলের অনেকেই জানাচ্ছেন, অতীতে যে কোনও রাজনৈতিক দলের নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তখনও পরিচয়পত্র দেখে সংবাদমাধ্যম-সহ অফিসার-কর্মীদের নবান্নে ঢুকতে দেওয়া হত। তবে এ দিনের চিত্র ছিল একেবারেই আলাদা।

আরও পড়ুন: লাঠি, বোমা, গ্যাসে ধুন্ধুমার, উদ্ধার পিস্তল, শূন্য নবান্ন থেকে দূরেই বিজেপি

প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, অতীতে যত নবান্ন অভিযান কর্মসূচি হয়েছে, তার থেকে এ দিনের কর্মসূচিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছিল প্রশাসন। কারণ, বুধবার বিজেপির যুব মোর্চা চিঠি দিয়ে প্রশাসনকে জানিয়েছিল, তাদের এ দিনের কর্মসূচিতে দু’টি পৃথক জায়গা থেকে মিছিল হবে। এক-একটি মিছিলে অন্তত ২৫ হাজার করে দলীয় কর্মী-সমর্থক থাকবেন। নবান্নের কাছে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রীকে দাবিপত্রও দেবেন তাঁরা। ফলে ওই কর্মসূচিকে ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা করেছিলেন গোয়েন্দারা। নবান্নের কাছাকাছি মিছিল পৌঁছলে পরিস্থিতি যাতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে না যায়, তাই ভবন সংলগ্ন এলাকায় কাউকেই যেতে দেওয়া হয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE