বে-হুঁশ: বাইকে চড়ে উৎসবে শামিল। কিন্তু ছোটদের মাথায় নেই হেলমেট। মঙ্গলবার, ধর্মতলায়। ছবি: শৌভিক দে
বড়দিনের আগে সোমবার কলকাতা পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছিল ‘সান্তা-বুড়ো’ মোটরবাইক চালককে হেলমেট পরাচ্ছেন। সঙ্গে লেখা, ‘সান্তা শুধু ছোটদের নয়’। কিন্তু সেই প্রচারের সারমর্ম যেন উপলব্ধি করতে চাইল না বড়দিনের সন্ধ্যার কলকাতা। কেউ বেপরোয়া ভাবে হেলমেট ছাড়া খালি মাথায় বাইকে ঝ়ড় তুললেন। কেউ হেলমেট হাতে ধরে রাখলেন। কেউ আবার নিজে হেলমেট পরে বাইকের ট্যাঙ্কের উপরে বসানো সন্তানের মাথা খালি রেখেই উৎসবের শহরে দাপিয়ে বেড়ালেন। কিন্তু প্রচারে তৎপরতা দেখানোর পরে রাস্তায় বেপরোয়া বাইকআরোহীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ততটা সক্রিয় হতে দেখা গেল না পুলিশকেও।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধর্মতলায় হেলমেটহীন বাইকআরোহীদের হুল্লোড় দেখে তাই এক পথচারীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘উৎসবে সব ছাড় আছে। সবচেয়ে বড় ছাড় তো হেলমেটেই।’’ সোমবার, বড়দিনের আগের রাতেই মোটরবাইক চালকদের সতর্ক করতে ‘সান্তা’র ছবি দিয়ে পোস্ট করেছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল বড়দিনের সন্ধ্যা থেকে রাত— ‘সান্তা’ সীমাবদ্ধ রইল ছোটদের মধ্যেই। ট্র্যাফিক পুলিশের কড়া নজরদারি, কিংবা জরিমানার ভয় উড়িয়ে উন্মত্ত মোটরবাইক আরোহীদের দেখা গেল হেলমেট ছাড়াই বহাল তবিয়তে ‘উড়ে’ বে়ড়াতে।
এ দিন সকাল থেকে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে কলকাতার অনেক রাস্তাতেই। শোভাবাজার মোড়ের কাছে এক দল মোটরবাইক আরোহীকে দেখা গেল, পুলিশি নজর এড়াতে অরবিন্দ সরণি ছে়ড়ে রাজবল্লভ পাড়ার গলিপথ ধরতে। সওয়ার তরুণ-তরুণীর কারও মাথাতেই হেলমেট নেই। দুপুরে চিড়িয়াখানার সামনে জটলা করা বাইকচালকদের মাথার বদলে হাতে হেলমেট ধরে রাখতে। জনৈক চালকের দাবি, ‘‘আজকের জন্য ছাড় আছে। দেখছেন না পুলিশ কিছুই বলছে না!’’ সন্ধ্যায় এমন চালকদেরই ভি়ড় দেখা গেল পার্ক স্ট্রিট তল্লাটে দাপিয়ে বেড়াতে। রাতের দিকে টলোমলো পায়ে রেস্তরাঁ-পানশালা থেকে বেরিয়ে হেলমেট ছাড়াই বেপরোয়া ভাবে বাইক চালিয়ে চলে যেতে দেখা গেল এমনই চালকদের।
(নীচে) সোমবার রাতের পার্ক স্ট্রিটে হেলমেটহীন বাইকচালকদের রমরমা।
দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোতেও এ ধরনের বেপরোয়া মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য ছিল। বাইক দুর্ঘটনায় কলকাতা শহরে দুর্গাপুজোর সময় বেশ কয়েক জন মারা গিয়েছিলেন। যদিও কলকাতা পুলিশের দাবি, বড় দিনের রাতেও কড়া হাতে সব সামলানো হয়েছে। তবে মানুষকে সচেতন করতে আরও সময় দিতে হবে বলেই মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘শুধু জরিমানা নয়। বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের মতো বাইকচালকদের কাউন্সেলিং করা চলছে। যাতে তাঁরা সচেতন হন।’’সেই সঙ্গে বাইচালকের ক্ষেত্রে মোটর ভেহিক্ল আইনের ১২৯ নম্বর এবং পিছনে বসা যাত্রীর ক্ষেত্রে ১২৮ নম্বর ধারায় কেস করা হয়েছে। জরিমানা হয়েছে ১৭৭ নম্বর ধারায়। পুলিশই জানিয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর রাত থেকে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অপরাধে। এঁদের বেশির ভাগই মোটরবাইক চালক বা আরোহী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy