সোহম চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের বিধায়ক-অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর সঙ্গে নিউ টাউনের একটি রেস্তরাঁর মালিকের গোলমাল গড়িয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। এ বার এই ঘটনায় থানার আইসি-কে শোকজ় করল বিধাননগর কমিশনারেট। এ দিকে, ওই রেস্তরাঁ-মালিক আনিসুল আলম জানিয়েছেন, স্থানীয় পাথরঘাটা পঞ্চায়েত হঠাৎই তাঁর রেস্তরাঁর কাগজপত্র দেখতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
আনিসুলের রেস্তরাঁয় গত মাসে মারামারির ঘটনাটি ঘটে। একটি ভিডিয়ো ফুটেজে (যেটির সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) দেখা যায়, সোহম রেস্তরাঁর ভিতরে আনিসুলকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিচ্ছেন, লাথি মারছেন ও কলার ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। আনিসুলের অভিযোগ ছিল, রেস্তরাঁর সামনে থেকে গাড়ি সরাতে বলায় তাঁর সঙ্গে বচসা হয় সোহমের লোকজনের। তার পরে সোহম তাঁকে মারধর করেন। সোহম পরে রেস্তরাঁ-মালিককে মারধরের কথা স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশও করেছিলেন। তাঁর দাবি, আনিসুল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে গালিগালাজ করেন। তাই তিনি মেজাজ হারান।
পুলিশ সোহমের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য এবং তাঁর বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে— এমন অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন আনিসুল। বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট বিধাননগর পুলিশের উপ-নগরপালের কাছে রিপোর্ট তলব করে জানতে চেয়েছে, টেকনো সিটি থানার সিসি ক্যামেরা কোন দিন থেকে কোন দিন পর্যন্ত কাজ করেনি, তা জানাতে হবে। আনিসুলের আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথমে আদালতে জানিয়েছিল, থানায় সমস্ত ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। যে দিন আমরা আদালতকে জানালাম যে, আমার মক্কেলকে জোর করে থানায় বসিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে, তার পরের দিনই পুলিশ আদালতে জানাল, সিসি ক্যামেরা খারাপ ছিল। ফুটেজ সংরক্ষণ করা যায়নি। এটা তথ্য লোপাটের শামিল। আইসি-কে শোকজ় করেছে কমিশনারেট। আশা করি, এটা লোক দেখানো নয়।’’
বিধাননগর কমিশনারেট ঘটনার তদন্তভার টেকনো সিটি থানার হাত থেকে গোয়েন্দা বিভাগকে দেয়। আনিসুলের বন্ধু জিম নওয়াজ বলেন, ‘‘ওই রাতে আনিসুলদের কলার ধরে পুলিশ নিজেদের গাড়িতে চাপিয়ে থানায় নিয়ে গিয়ে বিষয়টি মিটমাট হয়ে গিয়েছে, এই মর্মে মুচলেকা লেখায়। রাতে আইসি সোমনাথ ভট্টাচার্য ও সাব-ইনস্পেক্টর সুদীপ্ত নস্কর রেস্তরাঁয় এসে হুমকি দেন। পরদিন আইসি ফের রেস্তরাঁয় গিয়ে এক কর্মীকে দিয়ে একটি সাদামাটা অভিযোগ দায়ের করান।’’
ঘটনার পরদিন আনিসুল ফের টেকনো সিটি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ এফআইআর নিতে চায়নি বলে তাঁর দাবি। যা নিয়ে আনিসুল হাই কোর্টে মামলা করেন। গত ৩ জুলাই ভিডিয়ো রেকর্ডিং ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ-সহ হাই কোর্টে আনিসুলের তরফে জানানো হয়, কী ভাবে আইসি ও এসআই অভিযোগ লিখিয়েছেন এবং ঘটনার রাতে আনিসুলদের পুলিশ কী ভাবে কলার ধরে গাড়িতে তুলেছে।
দু’দিন আগে কমিশনারেট শোকজ় করে আইসি-কে। সেই নথি পুলিশ আদালতে দিয়ে জানায়, হাই কোর্ট থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করতে বলা সত্ত্বেও কেন ফুটেজ বা দিনের উল্লেখ মেলেনি, আইসি-কে সাত দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শাতে হবে। কমিশনারেটের মতে, এটা চরম গাফিলতি। এক পুলিশকর্তা জানান, থানায় কী ঘটেছিল, তার তদন্ত চলছে। এ নিয়ে আইসি-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটি প্রযুক্তিগত বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy