ধৃত জয়দেব দাস। —নিজস্ব চিত্র।
কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে ‘কেউটের’ সন্ধান পেল পুলিশ। বুধবার ট্যাংরা এলাকায় গাঁজা উদ্ধার করতে গিয়ে জালে পড়েছিল জয়দেব দাস নামে এক ব্যক্তি। তাকে জেরা করে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র বলেই মনে করছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।
এমনিতে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মানবাধিকার সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিল জয়দেব। নিজের ব্যক্তিগত দু’জন নিরাপত্তা রক্ষী, কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, ঠাটবাট দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এই ব্যক্তিই কি না কলকাতা শহরে মাদক পাচারের অন্যতম মাথা! গোয়েন্দারা তাঁকে জেরা করে জানতে পেরেছেন, জয়দেব গত লোকসভা নির্বাচনে ‘ভারতীয় মানবাধিকার পার্টি’-র প্রার্থী হিসেবেও দাঁড়িয়েছিলেন।
ফেসবুকে জ্বলজ্বল করছে তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ছবি। এমনকি টালিগঞ্জের এক প্রথাম সারির অভিনেত্রীর সঙ্গেও তাঁর ছবি রয়েছে। এমনই ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তির বর্ম পরে দিব্য মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন জয়দেব!
আরও পড়ুন: ছ’মাসেই ঘুরে দাঁড়িয়ে চাঙ্গা তৃণমূল, তোলপাড় শুরু বিজেপিতে, এনআরসির পরোক্ষ শিকার বাম-কংগ্রেসও
গত কয়েক মাসধরে কলকাতা, সল্টলেকের স্কুল-কলেজের সামনে মাদকপাচারকারীদের গ্রেফতারের পর জয়দেবের নাম উঠে আসছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও তথ্যপ্রমাণ পাচ্ছিল না পুলিশ। বেশ কয়েক দিন ধরে তার উপরে নজর রাখছিলেন গোয়েন্দারা। অবশেষে শিয়ালদহের কাছে জয়দেবকে হাতেনাতে পাকড়াও করে পুলিশ।
জয়দেবের সোর্স এতটাই শক্তিশালী, গ্রেফতার হওয়ার পরই এই খবর তার স্ত্রী গৌরী দাসের কাছে চলে গিয়েছিল। পুলিশ ট্যাংরায় জয়দেবের ফ্ল্যাটে পৌঁছনোর আগেই মাদক পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টাও করেন গৌরী। এমনকি সিসি ক্যামেরায় গোয়েন্দাদের আসতে দেখে, গৌরী তাঁদের পোষ্য রটউইলার ও ডোবারম্যানকে লেলিয়ে দেয় পুলিশ কুকুর হ্যান্ডলারের উপরে। এই চক্রে যেমন তার স্ত্রী জড়িত রয়েছে, তেমনই জয়দেবের ভাগ্নেকেও কয়েক মাস আগে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় গৌরীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দু’জনকেই আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁদের ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: হিন্দু মেয়ের সঙ্গে ফূর্তি করছিস? এই বলেই দাড়িওয়ালা যুবককে মার নাগেরবাজারে, হেনস্থা সঙ্গীকেও
হেফাজতে নিয়ে গোয়েন্দারা জানতে চাইছেন, এই মাদকের কারবারে আর কারা জড়িত। কোথা থেকে মাদক আসছে, কারা কারা লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে— এমনকি এই মাদক পাচারের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy