গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
ব্যাঙ্কের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে আধার কার্ড। আর সেই আধার কার্ডে রয়েছে চোখের রেটিনা স্ক্যান, আঙুলের ছাপের মতো অতি ব্যক্তিগত তথ্য। আর এ বার সেই সব তথ্য চলে আসছে ব্যাঙ্ক জালিয়াতদেরও হাতের মুঠোয়। আঙুলের ছাপ নকল করে যে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তারা সরিয়ে ফেলছে টাকা। খাস কলকাতার বাগুইআটিতেই সম্প্রতি এমন ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। যার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে কলকাতা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি নিজেদের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার বলে পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে এক গ্রাহকের আধার কার্ড নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর জোগাড় করে ফেলে। এমনকি, ওই ব্যক্তির আধার কার্ডে থাকা আঙুলের ছাপের তথ্য জাল করতে সমর্থ হয় তারা।
এর পরেই ওই সমস্ত তথ্য ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘আধার এনাবেলড পেমেন্ট সিস্টেম’-এর সাহায্য নিয়ে টাকা বার করে নেয় তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারীর নাম তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়স ৪৬। বাড়ি বাগুইআটির হাতিয়ারা রোড সংলগ্ন জ্যাংরা মণ্ডল পাড়ায় জেই২০ ব্লকে। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ব্যাঙ্ক জালিয়াতেরা ২৮ হাজার ৯০০ টাকা বার করে নিতে পেরেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তুষারকান্তি। তাঁর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে জালিয়াতির মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বাংলা এবং বিহারের সীমানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে দু’জনকে।
গ্রেফতার হওয়া দুই যুবকের নাম মোখতার আলম, বয়স ২৩ এবং রওশন আলি, বয়স ২২। দু’জনেই উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা। এই দু’জনের বিরুদ্ধে অন্তত আধার কার্ডের তথ্য নিয়ে এমন ছ’টি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, আধার কার্ড এবং ব্যাঙ্ক জালিয়াতির খবর পাওয়ার পরেই কলকাতা পুলিশ ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার একটি দল গঠন করে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করে। খতিয়ে দেখা যায়, বাংলার ইসলামপুর এবং বিহারের আরারিয়ার কাছাকাছি কোনও এলাকা থেকে এই জালিয়াতি করা হয়েছে। পুলিশের এই বিশেষ দলটি সেখানে পৌঁছে নির্দিষ্ট এলাকায় তল্লাশি চালায়। তার পরেই বুধবার গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া দু’জনের মধ্যে আঙুলের ছাপ নকল করার কাজ করেছে রওশন। আর এই গোটা কাজটি হয়েছে মোখতারের নামে নথিভুক্ত সিস্টেম থেকে।
পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনকেই আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত তাদের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy