Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সমস্যার মূলে ব্যাঙ্কক পার্টিই, ক্ষোভ দমদমে

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্যাঙ্ককে টিভি, ল্যাপটপ এবং পোশাক সস্তায় পাওয়া যায়। এক এক জন নির্দিষ্ট পরিমাণ জিনিসপত্র নিজের সঙ্গে এ দেশে আনতে পারেন। শহরের বাজারে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করা হয়। ভিন্‌ রাজ্যের যুবকেরা এই ব্যবসায় ‘ক্যারিয়ার’ হিসেবে কাজ করেন।

দমদমের এই বাড়ির ভিতরেই চলেছিল গুলি। নিজস্ব চিত্র

দমদমের এই বাড়ির ভিতরেই চলেছিল গুলি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০০:৪৮
Share: Save:

এলাকায় নানা মুখের ভিড়। অধিকাংশই ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা। শুক্রবার ভরসন্ধ্যায় গুলি চলার ঘটনার প্রেক্ষিতে সেই ভিড়ের কথাই উঠে আসছে। সেই ভিড়ের কারণেই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে অভিযোগ দমদমের মতিলাল নেহরু কলোনির বাসিন্দাদের একাংশের। দু’নম্বর মতিলাল নেহরু কলোনির বাসিন্দাদের লব্জে এই যুবকেরা হলেন, ‘ব্যাঙ্কক পার্টি’!

দু’নম্বর মতিলাল নেহরু কলোনির ঘটনাস্থল মূলত পুরসভার ৪ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা এলাকা। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিমানবন্দর সংলগ্ন আমবাগান, লিচুবাগান, নেহরু মার্কেট, হরিজন বস্তি-সহ দুই ওয়ার্ডের অসংখ্য ফ্ল্যাটে ভাড়াটে হিসেবে আছেন বিহার, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাতের মতো ভিন্ রাজ্য থেকে আসা যুবকেরা। তাঁদের ‘ব্যাঙ্কক পার্টি’ কেন বলা হয়? স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্যাঙ্ককে টিভি, ল্যাপটপ এবং পোশাক সস্তায় পাওয়া যায়। এক এক জন নির্দিষ্ট পরিমাণ জিনিসপত্র নিজের সঙ্গে এ দেশে আনতে পারেন। শহরের বাজারে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করা হয়। ভিন্‌ রাজ্যের যুবকেরা এই ব্যবসায় ‘ক্যারিয়ার’ হিসেবে কাজ করেন।

ইটালগাছার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এক মুখ বারবার ব্যাঙ্কক গেলে সমস্যা হতে পারে। সে জন্য ১৫-২০-৩০ জনের দল গড়া হয়। আমাকেই তো বলেছিল, ঘুমকে চলে আ। এদের চলাফেরা, বৈভব দেখলে তাজ্জব বনে যাবেন!’’ রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা এক যুবক বলেন, ‘‘এক বার যাতায়াতে ক্যারিয়ারেরা পায় হাজার দুয়েক টাকা। বিমানের ভাড়া, থাকা, খাওয়াদাওয়া, উপরি পাওনা ফুর্তি।’’ এই কারবারের হাত ধরে এলাকায় কাঁচা টাকা যে ভাবে উড়ে বেড়াচ্ছে, সেটাই সমস্যার মূলে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যুবক দিলীপ রাওয়ের এ দিন দত্তাবাদ সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যুবকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল কিন্তু সঙ্কটজনক। এখনও জখম যুবকের দাদা বাপি রাও বলেন, ‘‘ভাই জানিয়েছে, দোতলার ঘরে ও ঢোকা মাত্র পিছন পিছন সাত জন যুবক ঘরে ঢুকে পড়ে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে প্রথমে মোবাইল ফোন বন্ধ করতে বলে।’’ তাঁর বক্তব্য, এর পরে টাকাপয়সা যা ছিল, সব ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ওই যুবক নিজের কাছে থাকা ব্যাগ দিতে অস্বীকার করলে আগ্নেয়াস্ত্রের পিছনের অংশ দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। তাতেও ব্যাগ না ছাড়লে চালানো হয় গুলি।

পুরো ঘটনায় উদ্বিগ্ন মতিলাল নেহরু বাজার কমিটির সভাপতি সুরেশ কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘বাজারে কিছু সোনার দোকান রয়েছে। রাত পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা বাজারে থাকেন। আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাব।’’ চার নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তাপস রায় বলেন, ‘‘এলাকায় কারা ভাড়া থাকছেন, সে বিষয়ে তথ্য জানতে সক্রিয় হব।’’ পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা জওহর উপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম দমদমে গুলি চলার মতো ঘটনা ঘটল। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’

শুক্রবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশ নিজস্ব কায়দায় তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bangkok Party Law and Order Dumdum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy