Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Madan Mitra Kalyan Banerjee

এক ফোনে মিটমাট মদন বনাম কল্যাণ ঝগড়ার, দুই নেতার মুখেই আপাতত ‘পুরানো সেই দিনের কথা’

মদন এখন সাধারণ বিধায়ক। আর কল্যাণ লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের মুখ্যসচেতক। তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, দলের প্রথম সারির নেতৃত্বের নির্দেশেই মদন কল্যাণকে ফোন করেছিলেন।

Madan Mitra called Kalyan Banerjee in a quarrel between them

(বাঁ দিকে) মদন মিত্র, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৮
Share: Save:

কয়েক দিন ধরেই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া চলছিল। মুখোমুখি নয়। সংবাদমাধ্যম মারফত। একে অন্যের বিরুদ্ধে কামান দাগছিলেন। সে সব বাক্যবাণ কোথাও কোথাও শালীনতার মাত্রাও ছাড়িয়ে যাচ্ছিল বলে অভিমত জানাচ্ছিলেন দলের অনেকে। কিন্তু সেই ঝগড়ায় আপাতত ‘ইতি’।

কথা কাটাকাটিতে ‘আব্বুলিশ’ দিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন মদন মিত্র। সেই ফোনের পরে দু’জনেই জানিয়েছেন, সব মিটে গিয়েছে। যদিও অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, মিটেছে বটে। তবে ‘আপাতত’। আবার কোনদিন কে কার বিরুদ্ধে হুঙ্কার দেবেন, তা দেবা না জানন্তি, কুতো তৃণমূল!

মদন এখন সাধারণ বিধায়ক। আর সাংসদ কল্যাণ লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক। তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, দলের প্রথম সারির নেতৃত্বের নির্দেশেই মদন কল্যাণকে ফোন করেছিলেন। যদিও এ ব্যাপারে মদন তো বটেই, কেউই আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলেননি। তবে মদন এবং কল্যাণের কথা কাটাকাটি নিয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ‘অখুশি’ ছিলেন বলেই খবর। সেই প্রেক্ষাপটে মিটমাট করা ছাড়া উপায়ও ছিল না।

শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণকে বৃহস্পতিবার রাতের দিকে ফোন করেছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন। দু’জনের মধ্যে মিনিট ২০ কথা হয়েছে বলে খবর। মদন ফোন করার কথা মেনে নিয়েছেন। কল্যাণও জানিয়েছেন, ‘বন্ধু’ মদন তাঁকে ফোন করেছিলেন। মদনের কথায়, ‘‘আমি আমার কথা বলছিলাম। কল্যাণ ওঁর কথা। কিন্তু আমাদের কথা নিয়ে দলের নিচুতলায় ভুল বার্তা যাচ্ছিল। সেটা ঠিক হচ্ছিল না।’’ কল্যাণও বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দল করছি। একসঙ্গে রয়েছি। যা হয়েছে, সে সব মিটিয়ে নিয়েছি।’’ ঘটনাচক্রে, যুযুধান দুই নেতাই দীর্ঘ দিন ধরে তৃণমূলের সদস্য। দু’জনেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। দু’জনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসতবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তাই তাঁদের ঝগড়া নিয়ে দলের মধ্যেও আলোচনা শুরু হয়েছিল।

কসবার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যেই বিতর্কের সূত্রপাত। প্রথম পুলিশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই সুরেই পুলিশকে আক্রমণ করেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। কামারহাটির রাজনীতিতে বরাবরই মদন সৌগতের ‘বিরোধী’ বলে পরিচিত। মদন সৌগতকে কটাক্ষ করা দিয়ে বিতর্কের ময়দানে এসে হাজির হন। তার পরে দেখা যায় নেমে পড়েছেন কল্যাণও। শেষ পর্যন্ত মমতার দুই প্রতিবেশী নেতা মদন এবং কল্যাণ একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। সারদা মামলায় মদনের জেলখাটার ঘটনা টেনে আনেন কল্যাণ। পাল্টা কল্যাণের উদ্দেশে মদন বলেন, ‘‘ছোটলোকের কথায় মুখ লাগাব না।’’

পোশাক-আশাকের জন্য মদনকে কয়েক বছর আগে ‘কালারফুল বয়’ আখ্যা দিয়েছিলেন স্বয়ং মমতা। কিন্তু সেই মদন রাজনীতিতে ইদানীং কিছুটা ‘নিষ্প্রভ’। মাঝে তাঁর শারীরিক অসুস্থতাও ছিল। এই সময়ে বরং কল্যাণ জাতীয় রাজনীতিতে নানা ভাবে রং ছড়িয়েছেন। কখনও সংসদে দাঁড়িয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নকলনবিশি করা আবার কখনও লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে সারিতে বসেন, সেখানে গিয়ে বসে পড়া— কল্যাণই হয়ে উঠেছেন ‘কালারফুল’। সেই দুই ‘কালারফুল’ নেতার ঝগড়ায় এক ফোনে ইতি পড়ল। আপাতত তাঁরা ‘ফোন আ ফ্রেন্ড’। আপাতত।

অন্য বিষয়গুলি:

Madan Mitra Kalyan Banerjee TMC Leaders
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy