সাজানো: এখনও চালুই হয়নি মেশিন। ছবি: অরুণ লোধ।
অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের দাম আট লক্ষ টাকারও বেশি। যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য সেগুলি রাখা রয়েছে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের পাশে। কিন্তু না হচ্ছে তার ব্যবহার, না রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের কোনও তোড়জোড়। ধুলো-ময়লায় অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্টের পথে রেলের লক্ষাধিক টাকা। মেশিনের ব্যবহার নিয়ে কোনও প্রচার না থাকার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার স্টেশনগুলিতে এই মেশিন বসানো হয়েছে। সেখানে খুচরো টাকা অথবা স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারেন যাত্রীরা। কিন্তু সাধারণ মানুষের তা বুঝতে অসুবিধা হয় বলে দাবি যাত্রীদের। তাই রেলের তরফ থেকে ওই মেশিনের পাশে এক জন করে কর্মী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পূর্ব রেলের কর্তারা। প্রতিটি স্টেশনে টিকিট কাউন্টার থেকে এক জন করে কর্মীকে নিয়োগও করা হয়। আদতে একটিও মেশিনের পাশে কেউ থাকে না বলেই অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। তাই অব্যবহারে দিনের পর দিন কার্যত নষ্ট হচ্ছে মেশিনগুলি।
পূর্ব রেলের এক কর্তা জানান, বজবজ থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত এ রকম প্রায় ১৪টি মেশিন রয়েছে। ৭০ লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যের মেশিনগুলি স্রেফ ফেলে রাখা। শুধুমাত্র শিয়ালদহ স্টেশনেই রয়েছে আটটি মেশিন। অথচ যাত্রীরা কেউই তা তেমন ব্যবহার করেন না। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘যাত্রীরা যেন মেশিনটি ব্যবহার করতে পারেন সে কারণে সংশ্লিষ্ট টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের মেশিনের পাশে থাকতে বলা হয়েছিল। পুরো পদ্ধতি হাতে ধরে শেখানোর নির্দেশ ছিল।’’ তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগও আসেনি বলে জানান তিনি। পরে তাঁর বক্তব্য, ‘‘অবশ্যই খোঁজ নেব। এত টাকা খরচ করে মেশিন বসানো হয়েছে, পড়ে থেকে নষ্ট হতে দেব না।’’
একই অভিজ্ঞতা দক্ষিণ পূর্ব রেলেরও। সেখানেও একই ভাবে মেশিন পড়ে থাকে বলে জানাচ্ছেন কর্তারা। এ জন্য অস্থায়ী ভাবে কয়েক জন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছিল। যাত্রীদের হাতে ধরে শেখানোও হয়। কিন্তু অস্থায়ী কর্মীরা চলে যেতেই যাত্রীরা ওই মেশিনের দিকে ফিরেও তাকান না।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘যাত্রীরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অথচ কেউ গিয়ে মেশিনে টিকিট কাটছেন না।’’ যাত্রীরা মেশিন ব্যবহার করতে অক্ষম, এই যুক্তি মানতে নারাজ তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকে হয়তো ভাবেন, টাকা দিলেও যদি টিকিট না বের হয়, তা হলে কী হবে। কিন্তু সেরকম কিছু হবে না। যাত্রীরা এগুলি ব্যবহার করলে তাঁদেরই সময় বাঁচবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy