আনন্দনগরের বাড়িতে প্রণব ভট্টাচার্য। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জন্য গাড়িচালক নিয়োগের যাবতীয় কাজ হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিস থেকেই। এমনকি, পার্থ নিজেই ফোন করে কথা বলেছিলেন সেই চালকের সঙ্গে। এর পরেই ঠিক হয়েছিল বেতন এবং কত ঘণ্টার ডিউটি-সহ যাবতীয় সব কিছু। শনিবার এমনই দাবি করলেন অর্পিতার সেই গাড়িচালক প্রণব ভট্টাচার্য।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তদন্তে ধরা পড়েছেন পার্থ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা। অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটের কেবল একটি গাড়িই চালাতেন প্রণব। বছর চৌত্রিশের প্রণবের বাড়ি ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার আনন্দনগরের শীলপাড়ায়। বাড়িতে স্ত্রী, দাদা, মা ছাড়াও রয়েছেন অন্য আত্মীয়েরা। মাস সাতেক আগে অর্পিতার গাড়ির চালক হিসেবে কাজ শুরু করেন প্রণব। এর আগে পাড়ার এক জায়গায় গাড়িচালকের কাজ করতেন। নতুন কাজের খোঁজ করায় এক বন্ধু ওই কাজের খবর দেন। সেই সূত্রেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে নাম এবং ফোন নম্বর লিখিয়ে আসেন তিনি। প্রণব বলেন, ‘‘বন্ধু বলেছিল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসে যোগাযোগ করতে। আমি প্রথমে বেহালার অফিসে কথা বলে আসি। দিনকয়েক পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেই ফোন করে আমার সঙ্গে কথা বলেন। কী কী কাজ করতে হবে, তিনিই সব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।’’
অর্পিতা প্রায়ই যে পার্থের নাকতলার বাড়ি এবং বেহালার অফিসে যেতেন, এ কথা স্বীকার করে নেন প্রণব। তিনি বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই অর্পিতা ম্যাডামকে নিয়ে নাকতলার বাড়িতে যেতে হত। কখনও আবার আমাকে বেহালার ম্যান্টনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসেও যেতে বলতেন। তবে বেশির ভাগ দিনই এখানে নামানোর পরে গাড়িটা ফ্ল্যাটে রেখে দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলতেন।’’
প্রণব জানান, তাঁর কাজের সময় ছিল বেলা ১১টা থেকে। প্রতিদিন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে গাড়ি করে বেরোতে হত। প্রণবের কথায়, ‘‘নির্দিষ্ট কোনও জায়গা থাকত না। কখনও কসবার অফিসে, আবার কখনও বিভিন্ন নেল পার্লারে গাড়ি নিয়ে যেতে বলতেন তিনি।’’ বাকি জায়গায় গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করতে বললেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি অথবা অফিসে গেলে গাড়ি নিয়েই ফিরে যেতে বলতেন বলে দাবি ওই চালকের। এমনকি, টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে পার্থকে আসতে দেখেছিলেন বলেও দাবি করেছেন প্রণব।
গত শুক্রবার ইডি-র তল্লাশির দিনেও সময় মতো তিনি টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে পৌঁছন বলে এ দিন জানিয়েছেন প্রণব। তিনি বলেন, ‘‘বেলা ১১টায় পৌঁছে দেখি, ভিতরে প্রচুর লোকজন। জানতে পারি, তল্লাশি চলছে।’’ তবে ওই ফ্ল্যাটে যে এত টাকা রয়েছে, তার আঁচ পাননি বলেই দাবি প্রণবের।
ইতিমধ্যেই ইডি-র আধিকারিকেরা অর্পিতার ওই গাড়িচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে প্রণব জানান। এই মুহূর্তে আতঙ্কিত প্রণবের পরিবার। প্রণবের দাদা শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আমাদের টাকার লালসাও নেই। শুধু শান্তিতে থাকতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy