Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সেক্টর ফাইভ

ফের বহুতলে আগুন দেখাল সচেতনতার ফাঁক

রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মুখ, সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর। অথচ সেখানে বহু অফিসের অগ্নি-সুরক্ষায় এখনও ফাঁক রয়ে গিয়েছে। এই ফাঁকের কথা স্বীকার করে আগেই যথাযথ পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে দমকল নির্দেশিকাও দিয়েছিল। কিন্তু এতেও যে একাংশের হুঁশ ফেরেনি, মঙ্গলবার পাঁচ নম্বর সেক্টরে ওয়েবেল এসটিপি-২ বিল্ডিংয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফের তার প্রমাণ মিলল।

লড়াই চলছে দমকলের। মঙ্গলবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে

লড়াই চলছে দমকলের। মঙ্গলবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মুখ, সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর। অথচ সেখানে বহু অফিসের অগ্নি-সুরক্ষায় এখনও ফাঁক রয়ে গিয়েছে। এই ফাঁকের কথা স্বীকার করে আগেই যথাযথ পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে দমকল নির্দেশিকাও দিয়েছিল। কিন্তু এতেও যে একাংশের হুঁশ ফেরেনি, মঙ্গলবার পাঁচ নম্বর সেক্টরে ওয়েবেল এসটিপি-২ বিল্ডিংয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফের তার প্রমাণ মিলল।

দমকলকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বহুতলগুলির বেশির ভাগের ক্ষেত্রে ভেন্টিলেশন সিস্টেম যথাযথ নয়। আগুন লাগলে জানলা ভেঙে ধোঁয়া বার করতে হয় দমকলকর্মীদের। ফলে আগুন নেভাতে দেরি হয়, বাড়ে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাও। দমকলকর্মীদের কথায়, আগুন লাগলে ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার কথা, জানলাগুলিও খোলার কথা। কিন্তু অধিকাংশ বহুতলেই এই ধরণের প্রক্রিয়া থাকে না।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন যে অফিসে আগুন লাগে সেটিও কেন্দ্রীয় ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় ধোঁয়া বেরোতে পারেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো বহুতলটিই আগুনের দখলে চলে যায়। দমকলকর্মীরা পৌঁছে জানলার কাচ ভেঙে ধোঁয়া বার করেন। দমকল জানায়, সকাল ৬টা নাগাদ বহুতলের তিন তলার এক অফিসে আগুন লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যে ধোঁয়া বহুতলের উপরের দিকে ছড়াতে থাকে। দমকলের ৫টি ইঞ্জিন পৌঁছয়। এক মহিলা নিরাপত্তারক্ষী-সহ আরও দুই কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দমকল প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকলের অনুমান, সার্ভার রুমে শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন লাগে। তবে দমকলের একাংশের দাবি, সার্ভার রুমে বছরভর এসি চালু থাকে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই এসি মেশিন থেকে আগুন লাগে, এ ক্ষেত্রেও তেমনটাও হয়ে থাকতে পারে।

অথচ এলাকার প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ আগেও ফায়ার অডিট করেছেন। এ বছরও সে কাজ শুরু হয়েছে। নবদিগন্তের এক কর্তা জানান, ফায়ার অডিটের রিপোর্ট দমকলকে দেওয়া হয়। নবদিগন্ত সুপারিশ করতে পারে, কিন্তু পদক্ষেপ দমকল দফতরেরই করার কথা।

দমকলের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানান, যেখানে চার দিক ঢাকা, কেন্দ্রীয় ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, সেখানে ধোঁয়া বার করার ব্যবস্থা রাখতে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে প্রক্রিয়া বলবৎ করা হয়েছে। দমকল কর্তাদের দাবি, কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অগ্নি-সুরক্ষা বিষয়ে লাগাতার পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি চালানো হয়। অন্তত ২০০টি অ্যাডভাইজরি বোর্ডও গঠিত হয়েছে। এই তৎপরতার ফলেই এখন ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছনোর আগে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে।

যাঁরা নির্দেশ মানছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? সদুত্তর মেলেনি কর্তৃপক্ষের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fire buildings kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE