পার্ক সার্কাস মোড়ের আগে নয়া উড়ালপুলে যানজট। রবিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
টানা কয়েক ঘণ্টা সরেজমিন সমীক্ষা করেও পরমা উড়ালপুলে যানজটের জটিলতা থেকে আশু মুক্তির রাস্তা মিলল না। রবিবার ছুটির দিনে পুলিশ ও প্রশাসনের বড়কর্তাদের একটি দল এ দিন অকুস্থলে গিয়ে নানাভাবে অবস্থা খতিয়ে দেখেন। আজ, সোমবার ফের তাঁরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।
রবিবার ছুটির দিনেও মসৃণ ছিল না পরমা উড়ালপুলে যাতায়াত। প্রকল্পের তদারককারী সংস্থা কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস মান্না বলেন, ‘‘পরমার জট এড়ানোর সম্ভাব্য সব পথ নিয়ে এ দিন আমরা আলোচনা করেছি। কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। সোমবার আবার সব খতিয়ে দেখব।’’ কলকাতা পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদ অবশ্য দাবি করেন, ‘‘সম্ভাব্য সব রকম স্বল্পমেয়াদি কাজ নিয়ে কথা হচ্ছে। সমস্যার সমাধান তো করতেই হবে। দেখা যাক!’’
উড়ালপুল পার্ক সার্কাসের দিকে সাত মাথার মোড়ে পড়ার কিছু আগে রাস্তার প্রস্থ সাড়ে আট মিটার থেকে কমে সাড়ে পাঁচ মিটার হয়ে গিয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের এক পদস্থ অফিসার এ কথা জানিয়ে বলেন, এর ফলে রাস্তার অনেকটা অংশে চারটি গাড়ির বদলে দু’টি চলাই দায় হয়ে উঠেছে। অপেক্ষমাণ গাড়ির জট উঠে যাচ্ছে উড়ালপুলে। কেএমডিএ-র এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার স্বীকার করেন, ‘‘স্থায়ী সমাধানের জন্য দু’টি র্যাম্প তৈরি হবে। অনেকটাই সময় লাগবে এ কাজে। ততদিন পর্যন্ত উড়ালপুলের এই যানজট দূর করার পথ মিলবে কি না, সন্দেহ।’’
পুজোর দিনগুলোয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস বন্ধ থাকলেও রাস্তায় গাড়ি ও লোকের ভিড় বাড়ে। কলকাতা পুলিশের এক অফিসার এ দিন বলেন, ‘‘এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভিন্ রাজ্য বা জেলা থেকে আসা কৌতূহলী লোকের ভিড়ের আশঙ্কা। অনেকে নতুন অভিজ্ঞতার জন্য সদ্য চালু হওয়া এই উড়ালপুলে উঠতে চাইবেন। ফলে, ভিড় আরও বাড়বে। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেব, বুঝতে পারছি না।’’ তিনি জানান, ঠিক হয়েছে, এজেসি বসু রো়ড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ ও পার্ক স্ট্রিট থেকে যে সব গাড়ির উড়ালপুল ওঠার কথা, ভিড় বেশি হলে সেগুলিকে উড়ালপুলের নীচ দিয়ে পাঠানো হবে। যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) ভি সলোমন বলেন, ‘‘আপাতত আরও ট্রাফিক পুলিশ বাড়িয়ে বা সিগন্যালের মাধ্যমে জট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যায় কি না, তা দেখতে হবে। এখনই সমাধানের নির্দিষ্ট পথ তো কিছু পাচ্ছি না।’’
ঠিক হয়েছে, কংগ্রেস এগজিবিশন রো়ডের উপর দিয়ে সরাসরি এজেসি বসু রোড উড়ালপুলের সঙ্গে পরমা উড়ালপুলের একটি সংযোগপথ হবে। তার বিপরীতে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের পাশ দিয়ে একটি সংযোগপথ তৈরি হবে দুই উড়ালপুলের মাঝে। ফলে, পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে গাড়ির ভিড় কমানো সম্ভব হবে।
উড়ালপুল তৈরির কাজে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়তোষ ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘এত বড় একটি প্রকল্পের শুরুতে এ রকম সমস্যা আশ্চর্যের নয়। পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ের সংস্কারের মাধ্যমে সমস্যাটা অনেকটাই কমানো যাবে। পুজোর ছুটির মধ্যেও এই কাজ যতটা সম্ভব করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy