প্রতীকী ছবি।
কলকাতা বিমানবন্দরের দ্বিতীয় রানওয়ের মুখ থেকে মসজিদ সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ আবার নতুন করে উঠে এল। আর তা উঠল কেরলের কোঝিকোড়ে গত ৭ অগস্ট এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমান
দুর্ঘটনার পরে।
ওই বিমান দুর্ঘটনায় জানা গিয়েছিল, রানওয়েতে নেমে সেখানে দাঁড় করাতে না-পেরে বিমান নিয়ে গিয়ে খাদে পড়ে যান দুই পাইলট। ওই দু’জন-সহ মৃত্যু হয় ১৯ জনের।
বিমান নামার পরে কোনও কারণে রানওয়ের মধ্যে সেটি দাঁড়াতে না পারলে রানওয়ের পরেও কিছুটা জায়গা রাখা থাকে। যাতে সেই অতিরিক্ত জায়গা ব্যবহার করে পাইলট বিমান দাঁড় করাতে পারেন। রানওয়ের শেষ প্রান্তে থাকা এই জায়গাকে বলা হয় ‘রানওয়ে এন্ড সেফটি এরিয়া’ (রেসা)। বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি রানওয়ের শেষে ন্যূনতম ৯০ মিটার রেসা রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কলকাতার মতো যে সব বিমানবন্দরে বড় বিমান ওঠানামা করে, সেই সব বিমানবন্দরের রানওয়ের শেষে ২৪০ মিটার রেসা রাখার কথা বলা রয়েছে বিশ্বের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন’ (আইকাও)-এর নির্দেশিকায়। মসজিদ থাকার জন্য কলকাতার দ্বিতীয় রানওয়ের শেষ প্রান্তে (বিরাটির দিকে) রেসা রয়েছে ১৬০ মিটার।
আরও পড়ুন: ‘মানুষের কথা ভেবে’ নিয়ন্ত্রণ নয় কামারহাটি, বরাহনগরে!
এত দিন বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় স্তরে রাজ্য সরকারের বহু আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। এ বার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অরবিন্দ সিংহ। বুধবার ফোনে অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘আমি গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিষয়টি বলেছিলাম। এ-ও জানিয়েছিলাম, দ্বিতীয় রানওয়ের পরে আমাদের আরও জায়গা প্রয়োজন। উনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরে কোভিড চলে এল। এখন কোঝিকোড়ের দুর্ঘটনার পরে আমরা আবার দেশের বিমানবন্দরগুলির রানওয়ে তথা যাত্রী-নিরাপত্তা খতিয়ে দেখছি। নতুন করে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’’
মসজিদের সমস্যা সমাধানের জন্য একাধিক পরিকল্পনা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনওটিই ফলপ্রসূ হয়নি। এখনও বিমানবন্দরের বাইরে থেকে নমাজ পড়ার জন্য মানুষ যশোহর রোডের বাঁকড়ার দিকের সাত নম্বর গেট দিয়ে ভিতরে ঢোকেন। সূত্রের খবর, প্রতি শুক্রবার জনা সাতেক মানুষ আসেন। আর সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে মাঝেমধ্যে কোনও কোনও দিন দু’-তিন জন আসেন। গেট থেকে মসজিদ পর্যন্ত একটি রাস্তা করা আছে। বিমানবন্দরের ভিতরের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সেই রাস্তার দু’ধারে কাঁটাতারের উঁচু পাঁচিল রয়েছে।
কলকাতা বিমানবন্দরের সমান্তরাল দু’টি রানওয়ের মধ্যে যেটি দ্বিতীয়, সেটির বিরাটির দিকের মুখে রয়েছে এই মসজিদ। মসজিদ ওখান থেকে সরাতে পারলে দ্বিতীয় রানওয়ের দৈর্ঘ্য আরও বাড়ানো যেত। সে ক্ষেত্রে প্রথম রানওয়ে কোনও কারণে বন্ধ থাকলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দ্বিতীয় রানওয়ে থেকে ওঠানামা করতে সুবিধা হত বড় বিমানের। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও মসজিদ সরানো যায়নি। বদলে রাজারহাটের দিকে দ্বিতীয় রানওয়ে কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজারহাটের দিক থেকে যে বিমান দ্বিতীয় রানওয়েতে নামে, তাকে গিয়ে থামতে হয় মসজিদের দিকে। সেখানে রেসা-র সমস্যা রয়েছে। কোনও কারণে কোঝিকোড়ের মতো যদি দ্বিতীয় রানওয়ের ঠিক জায়গায় বিমান নামতে না-পারে এবং সেই বিমান রানওয়ে ছাড়িয়ে রেসা-য় পৌঁছে যায়, তা হলে মসজিদের সঙ্গে তার সরাসরি ধাক্কা লাগার আশঙ্কাও রয়েছে।’’
রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy