জনককুমার গর্গ। সোমবার পার্ক স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
পাতালপথে ট্রেনের দরজায় হাত আটকে যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শনিবার আর সরকারি ভাবে তার তদন্ত শুরু হচ্ছে পাঁচ দিন পরে, আগামী বৃহস্পতিবার। কেন?
মেট্রো-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দুর্ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা। সোমবার সেই পরিদর্শন সেরে নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু পরিবর্তন আনার সুপারিশ করেছেন কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি (মেট্রো সার্কল) জনককুমার গর্গ। যে-সব প্রত্যক্ষদর্শী তদন্তে অংশ গ্রহণ করতে চান, তাঁদের জন্য সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। তাই তদন্ত শুরু করার জন্য এই সময়টুকু দরকার।
ট্রেন থামার পরে যাত্রীদের নামা-ওঠা সম্পূর্ণ হল কি না, তা দেখার জন্য প্ল্যাটফর্মে চালকের কেবিনের সামনে বিশেষ ধরনের ‘উত্তল’ আয়না চান গর্গ। প্ল্যাটফর্ম ঘেঁষে স্ট্যান্ডে বসানো আয়নায় পুরো ট্রেন দেখা যাবে। গার্ডের নির্দেশের উপরে নির্ভর না-করে চালক আয়নায় দেখে নেবেন, যাত্রীদের নামা-ওঠা সম্পূর্ণ হল কি না। দরজায় কিছু আটকে থাকলে সেটাও দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তিনি।
এসি কামরায় মাইক্রোফোনের সঙ্গে ভয়েস রেকর্ডার বসানোরও পরামর্শ দিয়েছেন গর্গ। যাতে আপৎকালে যাত্রীরা ট্রেনচালকের সাহায্য চাইলে কথোপকথন রেকর্ড করা যায়। পরে তদন্তের প্রয়োজনে কামরার ভিতরের পরিস্থিতি জানার জন্য সেই টেপ ব্যবহার করা হতে পারে। ইতিমধ্যে পাঁচটি বাতানুকূল রেকে ভয়েস রেকর্ডার বসেছে।
দিল্লি থেকে সকালে পার্ক স্ট্রিটে মেট্রো ভবনে পৌঁছেই মেট্রোর চিফ অপারেশন্স ম্যানেজার সাত্যকি নাথ-সহ বিভিন্ন কর্তাকে নিয়ে পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে ঘটনাস্থল এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন গর্গ। পরে ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির যে-রেকে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, টালিগঞ্জে রাখা সেই রেক পরিদর্শন করেন। সজলকুমার কাঞ্জিলাল শনিবার ওই ট্রেনের তিন নম্বর কামরার দরজা দিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে হাত আটকে মারা যান। গর্গ সেই দরজা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন।
ঘণ্টাখানেক পরে পার্ক স্ট্রিট মেট্রো ভবনে ফিরে বিভাগীয় কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন দুর্ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক। বিকেলের দিকে নোয়াপাড়া কারশেডে গিয়ে মেট্রোর রেক রক্ষণাবেক্ষণ এবং অন্যান্য ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন তিনি।
প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পর থেকে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির রেক চালানো বন্ধ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের চালক এবং গার্ডকেও আপাতত ট্রেন চালানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। মেট্রোর সিকিয়োরিটি অ্যান্ড সেফটি অফিসারকে চিঠি লিখে দুর্ঘটনার ফুটেজ চেয়েছে পুলিশ। সে-দিন চালক, গার্ড এবং প্ল্যাটফর্মে থাকা আরপিএফ কর্মীদের ভূমিকা কী ছিল, তা-ও জানতে চেয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy