Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
College admission

‘আমাদের কী হবে’? শিক্ষামন্ত্রীর অনলাইন নির্দেশেও আতান্তরে বহু ছাত্রছাত্রী

মঙ্গলবারই এই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। এক ছাত্রর কাছ থেকে ভর্তির জন্য তিরিশ হাজার টাকা চাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

বিক্ষোভের পরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে পুলিশি প্রহরা।—নিজস্ব চিত্র।

বিক্ষোভের পরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে পুলিশি প্রহরা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ১৫:৩৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর পর নগরপাল। বুধবার সকালে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পরিদর্শনে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি সুরেন্দ্রনাথ কলেজে গিয়ে দশ মিনিটের মত সময় কাটান। কথা বলেন কলেজ কর্তৃপক্ষর সঙ্গে। ছাত্র ইউনিয়নের ‘দাদা’-দের টাকা না দিলে ভর্তি হবে না, এই অভিযোগ কলকাতার যে যে কলেজ নিয়ে সবচেয়ে বেশি উঠেছে, তার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ।

মঙ্গলবারই এই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। এক ছাত্রর কাছ থেকে ভর্তির জন্য তিরিশ হাজার টাকা চাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

নগরপালের এই কলেজ পরিদর্শন অবশ্য একেবারেই আশ্বস্ত করতে পারেনি ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকদের।

যেমন বেহালার অর্ণব রায়। মাস-কমিউনিকেশন অনার্স নিয়ে ভর্তি হতে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ফর্ম ভরে অর্ণব। ২৯ জুন কাউন্সেলিংয়ের দিন ছিল। অর্ণবের মামা শ্যামল মোদক বলেন, “সে দিন আমরা এসে দেখি, কাউন্সেলিংয়ের সেই নির্দিষ্ট ঘর তালাবন্ধ। খোঁজ করতে গিয়ে এক ইউনিয়ন নেতার দেখা পাই। সে স্পষ্ট বলে, টাকা না দিলে ভর্তি হবে না। তিরিশ হাজার টাকা চায়। বলে ২ জুলাই কলেজে টাকা নিয়ে এলে ভর্তি হয়ে যাবে। তার মধ্যেই এই ধরপাকড় শুরু হয়ে গেল। তাই সোমবার কলেজে টাকা নিয়ে যাইনি।”

আরও খবর
ছাত্রদশা পার, তবু তাঁদেরই হাতে সংগঠন

বুধবার সকাল থেকে কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে অর্ণব এবং তার মামা। শ্যামল বলেন, “আমাদের এখন কী হবে? ভাগ্নে ভর্তিও হতে পারল না। এখন পুলিশ কমিশনার এসে কী হবে? কলেজ কর্তৃপক্ষও তো কিছু জানাচ্ছে না।”

শুধু অর্ণব নন। আতান্তরে পড়া সব ছাত্রদেরই এটা প্রশ্ন। যাদের তালিকায় নাম ছিল অথচ ভর্তি হতে পারেননি, অথবা যারা টাকা দিতেও তৈরি ছিলেন, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেই ‘দাদারা’ বেপাত্তা, তাদের কী হবে?

মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী কেউ এঁদের ভবিষ্যত নিয়ে মুখ খোলেননি। অর্ণবের প্রশ্ন, “তা হলে কি আমরা এ বছর কোথাও ভর্তি হতে পারব না? না কলেজ মেধা তালিকা অনুযায়ী ফের ভর্তির সুযোগ দেবে?”

আরও পড়ুন
ভর্তি দুর্নীতি: সব দায় ঝেড়ে ফেললেন জয়া, সিলমোহর দিলেন পার্থ

বুধবার এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে থাকে ছাত্র-ছাত্রী এব‌ং অভিভাবকদের। তাঁরা কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভ সামলাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী চলে আসে। সৌরভ পাল নামে এক ছাত্র গত তিন দিন ধরে বারাসত থেকে রোজ আসছেন কলেজের সামনে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একটাই প্রত্যাশা নিয়ে— কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি ফের ভর্তির নোটিস দেয়।

কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, “শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা গোটা ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে করব। কাউকে কলেজে আসতে হবে না।” কিন্তু সেই প্রক্রিয়াতে যাঁরা এর আগে ভর্তি হতে পারেননি, তাঁরাও সুযোগ পাবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও রয়েছে। আর সেই ধোঁয়াশা কবে কাটবে, তা নিয়ে সংশয়ে শিক্ষা দফতরের কর্তারাই। উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী নির্দেশ জারি করা হয়েছে সব ভর্তি অনলাইনে হবে। এ বার পুরো প্রক্রিয়া নতুন করে হবে কি না তা নিয়ে আমাদের কোনও নির্দেশ দেননি মন্ত্রী।” অর্থাত্, এখন কী হবে তা নিয়ে সংশয়ে সবাই, আতান্তরে ভর্তি হতে না পারা ছাত্রছাত্রীরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy