Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Unnatural Death

তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম সুচেতা পাল (১৯)।শুক্রবার রাতে ঠাকুরপুকুর থানায় ফোন করেন সুচেতার দিদি শিল্পা। পুলিশ গিয়ে দেখে, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস জড়ানো অবস্থায় রয়েছেন সুচেতা।

An image of Death

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:১৯
Share: Save:

মেস হিসাবে ভাড়ায় দেওয়া ঘর থেকে উদ্ধার হল এক কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ। শুক্রবার রাতে ডায়মন্ড হারবার রোডের এই ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত রহস্য কাটেনি। পুলিশ জেনেছে, মেসে দিদির সঙ্গেই থাকতেন বছর ঊনিশের ওই কিশোরী। মৃতার দিদি, পেশায় এক বেসরকারি হাসপাতালের নার্স ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম সুচেতা পাল (১৯)। শুক্রবার রাতে ঠাকুরপুকুর থানায় ফোন করেন সুচেতার দিদি শিল্পা। পুলিশ গিয়ে দেখে, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস জড়ানো অবস্থায় রয়েছেন সুচেতা। দ্রুত তাঁকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের কাছে শিল্পা জানান, হুগলির গুড়াপে তাঁদের বাড়ি। বেঙ্গালুরু থেকে নার্সের প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করছিলেন। দেড় বছর ডায়মন্ড হারবার রোডের ওই মেসবাড়িতে তিনি থাকছিলেন। তাঁর মেজো বোন সুচেতা দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজে সম্প্রতি মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে ভর্তি হন। তিনিও শিল্পার সঙ্গে মেসে থাকা শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে আরও এক তরুণী থাকতেন। তিনি সম্প্রতি উঠে গিয়েছেন।

পরিবার সূত্রের খবর, মৃতার বাড়ি হুগলির গুড়াপের গুড়বাড়ি ১ পঞ্চায়েতের বালিডাঙা গ্রামে। তিন বোনের মধ্যে সুচেতা মেজো। ছোট বোন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বাড়িতে বাবা-মা রয়েছেন। বাবার বয়স ৬০ বছর। তাঁর পেশা চাষবাস।

পুলিশের কাছে শিল্পার দাবি, বড়দিনের ছুটিতে তাঁদের দু’জনের গুড়াপে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বোন রাজি না হওয়ায় তিনিও থেকে যান। বোনের পড়াশোনায় ক্ষতি হোক, তা তিনি চাননি। বড়দিনে দু’জনে ঘুরতেও গিয়েছিলেন বলে দাবি শিল্পার। তিনি ফোনে বলেন, ‘‘কী কারণে এমন করল, বুঝতে পারছি না। গত দু’দিন খুব আনন্দ করেছি। ভাল রান্না করেছি। শুক্রবার বিকেলে যখন আমি ঘুরতে বেরোচ্ছি, তখন জানায়, ও যেতে চায় না। আগের দিনই বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখে ফিরেছে। এর পরে রাত পৌনে ৮টা নাগাদ যখন মেসের সিঁড়ি দিয়ে উঠছি, মেসের পাশের ফ্ল্যাটের একটি ছেলেকে হন্তদন্ত হয়ে নামতে দেখি। সে বলে, ‘তাড়াতাড়ি যাও, তোমার বোন কী করেছে দেখো’। ছেলেটি ছাদে ব্যায়াম করতে যায় বিকেলে। তখনই হয়তো বোনকে দেখেছে। মেসে গিয়ে দেখি দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। কয়েক বার ধাক্কা দিতে দরজা খুলে যায়। লক খুব পলকা ছিল। ঢুকে দেখি, পাখা থেকে বোন ঝুলছে।’’

শিল্পা আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে সুচেতা বোনের মোবাইলে ফোন করেছিলেন। বোন তখন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল। ফোন রাখা ছিল বাড়িতে। পরে ফিরে এসে ‘মিসড কল’ দেখে সুচেতার মোবাইলে ফোন করলে তখন তা বেজে যায়। কাঁদতে কাঁদতে শিল্পা বলেন, ‘‘সুচেতা হয়তো এমন কোনও কথা বোনকে বলতে চেয়েছিল, যা আমাকে বলতে পারেনি।’’

পুলিশ ওই যুবক এবং শিল্পার বক্তব্য খতিয়ে দেখছে। সামান্য ধাক্কাতেই বাইরে থেকে লক ভেঙে যাওয়ার যে দাবি করা হয়েছে, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মেসের ঘরের মালিক সুবীরকুমার দাস বলেন, ‘‘আমাকেও শিল্পাই ফোন করে এই ঘটনা জানিয়েছেন। দরজার লক এতটা দুর্বল বলে আমার মনে হয় না। পুলিশ যা যা জিজ্ঞাসা করবে, সবটা বলব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE