—প্রতীকী চিত্র।
গলায় কণ্ঠীর মালা, পরনের জামা-প্যান্টের রং ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে। ২১ জুলাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে গ্রামের নেতাদের আচার-আচরণে খানিকটা পরিবর্তন আসবে— এমনই আশা নিয়ে কোচবিহার থেকে কলকাতায় ধর্মতলার সমাবেশে এসেছিলেন। দলনেত্রী কিংবা দলের উপরে ভরসা থাকলেও আস্থা নেই স্থানীয় নেতাদের উপরে। দিনহাটার বাসিন্দা অবিনাশচন্দ্র বর্মণের কথায়, ‘‘বিজেপি আর কোথায়? সবই তো তৃণমূলের লোকজন। এলাকার নেতা আর নেতার কাছের লোকেদের খারাপ ব্যবহারে এখন সব বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে। একমাত্র দিদিই পারেন পরিস্থিতির বদল ঘটাতে। দিদির কথা শুনলে মনে ভরসা আসে। তাই এত দূরে ছুটে আসা।’’
এ বার পঞ্চায়েত ভোটে দিনহাটার বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এমনকি, কোথাও কোথাও ক্ষমতাবলে বিজেপি তৃণমূলকে কোণঠাসা করে দিয়েছিল বলেও খবর। দিনহাটার তেমনই এক এলাকা থেকে শুক্রবার ধর্মতলায় এসেছিলেন অবিনাশ-সহ কয়েক জন। তাঁর সঙ্গীরা পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগ করলেও দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অবিনাশের মতো ততটা সরব হননি।
অবিনাশের কথায়, ‘‘বিজেপি তো আকাশ থেকে পড়েনি। অনেকে বিরক্ত হয়ে তৃণমূল থেকে ও দিকে গিয়েছেন। প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে সব কিছুর ক্ষেত্রেই বুথ পর্যায়ের কর্মীদের কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। টাকা আর বন্দুকের জোরে টিকিট বিলি হয়েছে। যে কারণে দুই রাজনৈতিক দলের পতাকার আড়ালে স্থানীয় মানুষ নিজেদের মধ্যেমারামারি করেছেন।’’ বলতে বলতে দৃষ্টি কঠিন হয়ে আসে অবিনাশের। হাতের মুঠো শক্ত হয় প্রতিবাদের কায়দায়। সঙ্গে থাকা প্রতিবেশীরা থামানোর চেষ্টা করেন অন্যের জমিতে চাষের কাজ করা অবিনাশকে। উত্তেজিত গলায় ফের বলে ওঠেন অবিনাশ, ‘‘অনেক কষ্ট করে একটা জমি কিনেছিলাম। সেটা যে দখল করে নিল, সে বিজেপি করে। তৃণমূলের নেতাদের কাছে গিয়ে কত দরবার করলাম জমি উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য। কেউ কথা শুনতে চায় না। টাকা চায়। না দিতে পারলে গালাগালি করে। পঞ্চায়েত ডেকে সমঝোতা করিয়ে দিতে চায়।’’
অবিনাশদের মতো অনেকেই জানালেন, দিনহাটায় গোলমাল অনেকটাই স্থানীয় নেতাদের যথেচ্ছাচারের জন্য। তাঁদের কেউই রাজ্য নেতাদের কথা কানে না তোলেন না বলে অভিযোগ। বিজেন রায় নামে আর এক চাষির কথায়, ‘‘রাত হলেই ১০-১২ জন এলাকায় এসে বোমাবাজি করে যেত। ভোট পর্যন্ত একই পরিস্থিতি ছিল।’’ কারও নাম না করতে চাইলেও অবিনাশ, বিজেনদের মতো অনেকেই জানালেন, রাজ্য নেতারা বলা সত্ত্বেও স্থানীয় নেতারা পঞ্চায়েতের টিকিট বিলি করেছেন নিজেদের ইচ্ছে মতো। মানুষের পছন্দ-অপছন্দের কোনও দামই দেওয়া হয়নি। যার জেরে পঞ্চায়েত ভোটে দিনহাটার বহু জায়গায় পদ্মফুলের হয়ে ঘাসফুলের সঙ্গে লড়েছেন পুরনো তৃণমূলের লোকজনই। তাঁরা বলেন, ‘‘বিজেপি নয়, আমাদের যারা মারল তারা আদতে তৃণমূলই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy