২২ মার্চ শুরু আইপিএল। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি গত বারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স ও এক বারও আইপিএল জিততে না পারা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এ বারও কি শুরুতে দাপট দেখাবে কেকেআর? না কি বেঙ্গালুরু শেষ হাসি হাসবে? ইডেন গার্ডেন্সে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচের আগে কেকেআরের তিন শক্তি ও তিন দুর্বলতা খুঁজে দেখল আনন্দবাজার ডট কম।
কেকেআরের শক্তি:
১) মূল দল ধরে রাখা— আইপিএলের ইতিহাস বলে যে যে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি খুব বেশি বদল না করে মূল দল ধরে রেখেছে তারা সফল হয়েছে। কেকেআরের সাফল্যের নেপথ্যেও তা রয়েছে। এ বারও সেই ছবি দেখা গিয়েছে। গত বার কেকেআরে খেলা রিঙ্কু সিংহ, রহমানুল্লা গুরবাজ, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী, মণীশ পাণ্ডে, বেঙ্কটেশ আয়ার, অনুকূল রায়, রমনদীপ সিংহ, আন্দ্রে রাসেল, বৈভব অরোরা, হর্ষিত রানা, সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী ও চেতন সাকারিয়া এ বারও রয়েছেন। অর্থাৎ, ২১ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরনো। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া আগে থেকেই রয়েছে। নতুন করে তৈরি করতে হয়নি। কে, কেমন খেলেন সেটাও কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত ভাল ভাবে জানেন। ফলে পরিকল্পনা তৈরি করতে সমস্যা হবে না। এটা কেকেআরের বড় শক্তি।
২) নিলামে ভাল পরিবর্ত নেওয়া— নিলাম কাজে লাগিয়েছে কেকেআর। যে যে ক্রিকেটারকে তাদের ছাড়তে হয়েছে তাদের পরিবর্তে তেমনই ভাল ক্রিকেটার তারা পেয়েছে। যেমন গত বারের ওপেনার তথা উইকেটরক্ষক ফিল সল্টের বদলে এ বার নেওয়া হয়েছে কুইন্টন ডি’কককে। দীর্ঘ দিনের পোড়খাওয়া ক্রিকেটার তিনি। বাঁহাতি মিচেল স্টার্কের বদলে তাঁর দেশেরই বাঁহাতি স্পেনসার জনসনকে নেওয়া হয়েছে। রয়েছেন অভিজ্ঞ অনরিখ নোখিয়া। মিডল অর্ডারে শ্রেয়স আয়ারের জায়গায় অভিজ্ঞ অজিঙ্ক রাহানে খেলতে পারেন। অর্থাৎ, ক্রিকেটার চলে যাওয়ায় দল দুর্বল হয়ে পড়েনি। উল্টে আরও শক্তিশালী হয়েছে।
৩) অধিনায়ক রাহানের অভিজ্ঞতা— এ বারও এক দেশীয় অধিনায়কের উপর ভরসা রেখেছে কেকেআর। গত বার শ্রেয়স দলকে চ্যাম্পিয়ন করলেও এ বার তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে কলকাতা। রাহানে আইপিএলে অধিনায়ক হিসাবে তত সফল না হলেও তাঁর নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা শ্রেয়সের থেকে বেশি। ভারতের অধিনায়কত্ব করেছেন। বিদেশের মাটিতে সফল হয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। মাথা ঠান্ডা রেখে খেলেন। কঠিন পরিস্থিতিতে দলকে সামলাতে পারবেন। রাহানের এই অভিজ্ঞতা কেকেআরের বড় শক্তি।
আরও পড়ুন:
দুর্বলতা:
১) বিদেশি পেসারদের অভিজ্ঞতা কম— স্পেনসার জনসনের অভিজ্ঞতা আইপিএলে কম। অনরিখ নোখিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দীর্ঘ দিন খেললেও আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে এক মরসুম বাদে খুব ধারাবাহিক ভাবে খেলতে পারেননি। তিনি চোটপ্রবণ। সবে চোট সারিয়ে ফিরেছেন। ফলে তিনি কতটা ছন্দে থাকবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আন্দ্রে রাসেলও এখন এক, দু’ওভারের বেশি করতে পারেন না। এই জায়গায় সমস্যায় পড়তে পারে কলকাতা। বিদেশি পেসারেরা ভাল খেলতে না পারলে পুরো দায়িত্ব দুই দেশীয় পেসার হর্ষিত রানা ও বৈভব অরোরার উপর এসে পড়বে।
২) ক্রিকেটারদের গড় বয়স— কেকেআরের ১০ জন ক্রিকেটারের বয়স ৩০ বছরের বেশি। তাঁরা হলেন, অজিঙ্ক রাহানে (৩৬), আন্দ্রে রাসেল (৩৬), সুনীল নারাইন (৩৭), বরুণ চক্রবর্তী (৩৩), অনরিখ নোখিয়া (৩২), মইন আলি (৩৬), কুইন্টন ডি’কক (৩১), বেঙ্কটেশ আয়ার (৩১), মণীশ পাণ্ডে (৩৫) ও রভম্যান পাওয়েল (৩৩)। ফলে দলের গড় বয়স বেশি। টি-টোয়েন্টি তরুণদের খেলা। সেখানে ব্যাটিং, বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিং একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু নারাইন, বরুণ, নোখিয়ারা ফিল্ডার হিসাবে খারাপ। তাঁরা মাঠে থাকলে তাঁদের নিশানা করতে পারেন ব্যাটারেরা। পাশাপাশি লম্বা লিগ খেলার ধকলের ক্ষেত্রেও বয়স একটা বাধা। চোট পাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ফলে ভুগতে পারে কেকেআর।
৩) গম্ভীরের না থাকা— গত বার কেকেআর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল মেন্টর গৌতম গম্ভীরের। আগে অধিনায়ক হিসাবে দু’বার তিনি দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। মেন্টর হিসাবেও করেছেন। কেকেআরে থাকলে গম্ভীরের মধ্যে একটা বাড়তি আবেগ কাজ করে। গত বার তা দেখা গিয়েছে। প্রতিটি ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষ মেপে পরিকল্পনা করেছেন। নারাইনকে ওপেনিংয়ে এনে চমক দিয়েছেন। হর্ষিত, বৈভবের মতো বোলারদের তৈরি করেছেন। পণ্ডিত প্রধান কোচ হলেও গম্ভীরই যে দল চালিয়েছেন তা পরিষ্কার। ক্রিকেটারেরাও সাফল্যের কৃতিত্ব গম্ভীরকেই দিয়েছেন। এ বার তিনি নেই। বদলে ডোয়েন ব্রাভোকে মেন্টর করা হলেও তিনি কতটা সফল হবেন তা অনিশ্চিত। গম্ভীরের উপর ভরসা ছিল কলকাতার সমর্থকদেরও। ফলে সমর্থনের কোনও অভাব ছিল না। গম্ভীর ছিলেন কেকেআরের ‘এক্স’ ফ্যাক্টর। তাঁকেই এ বার পাবে না কলকাতা। ফলে সমস্যায় পড়তে পারে দল।
- ১৮ বছরের খরা কাটিয়ে ট্রফি জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথম বার আইপিএল জেতার স্বাদ পেয়েছেন বিরাট কোহলি। ফাইনালে পঞ্জাব কিংসকে ছ’রানে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু।
- ট্রফি জেতার পরের দিনই বেঙ্গালুরুতে ফেরেন বিরাট কোহলিরা। প্রিয় দলকে দেখার জন্য প্রচুর সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে। সেখানে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। আহত ৫০-এরও বেশি। ঘটনাকে ঘিরে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে।
-
১১ মৃত্যুর জের, আইপিএল জয়ের উৎসবে কী কী করা যাবে না, শনিবার ঠিক করবে বোর্ড, আর কী কী নিয়ে আলোচনা?
-
‘লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হবে’! বেঙ্গালুরুতে কোহলিদের উৎসবের আগে সতর্ক করেছিল পুলিশই, তবু কেন এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা
-
আইপিএলের শেষ পর্বে ছিলেন না, ভারত-পাক সংঘাত, না কি ‘বিশেষ’ কারণে খেলতে আসেননি স্টার্ক?
-
‘ভিড়ের চাপে স্ত্রীয়ের হাত ছুটে যায়’, পদপিষ্টে প্রিয়জন হারিয়ে কথা বলার ভাষা নেই পরিবারের
-
অফিসে খোলা পড়ে ল্যাপটপ, আরসিবি-র অনুষ্ঠান দেখেই ফিরবেন বলেছিলেন, ফিরে এল তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কামাক্ষীর দেহ