Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Ladakh

Kolkata to Ladakh: কলকাতা থেকে হেঁটেই লাদাখ যাত্রা

অজানা পথে একা হেঁটে যেতে ভয় করছে? ফোনের ও-প্রান্ত থেকে সুন্দর জানালেন, হেঁটে চলার পথে ক্লান্তি ছাড়া বিশেষ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি।

পথিক: লাদাখ যাওয়ার পথে হাজারিবাগে।

পথিক: লাদাখ যাওয়ার পথে হাজারিবাগে। ছবি: সুন্দর ওরাওঁয়ের সৌজন্যে।

কাজল গুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২২ ০৭:৪০
Share: Save:

পেশায় তিনি মোটরবাইক মেক্যানিক। নেশায় দুঃসাহসী ভ্রমণার্থী। যাঁর সঙ্গী শুধু দেশের জাতীয় পতাকা সাঁটা একটি রুকস্যাক। আর এই মুহূর্তে সঙ্গে আছে হাজার তিনেক টাকা। তা নিয়েই বছর চব্বিশের যুবক হেঁটে চলেছেন লাদাখের পথে!

তিনি সুন্দর ওরাওঁ। উত্তর দমদম পুরসভার কর্মী এতোয়া ওরাওঁয়ের একমাত্র সন্তান। দমদম বিমানবন্দর সংলগ্ন বিরাটির পশ্চিম নবনগরের বাসিন্দা সুন্দর ১৯ মে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে। সুন্দরের কথায়, আমাকে হাঁটতে দেখে পথচলতি মানুষ থেমে কৌতূহলবশত জিজ্ঞাসাও করছেন, গন্তব্যস্থল? কেউ তাঁর এমন প্রচেষ্টা শুনে বাহবা জানাচ্ছেন। কেউ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেছেন।

শনিবার দুপুরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সুন্দর জানান, হেঁটে ৯০ দিনের মধ্যে লাদাখে পৌঁছনোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এ জন্য দৈনিক ৫০-৬০ কিলোমিটার হাঁটার লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। তবে প্রথম কয়েক দিন দৈনিক ৩০-৩৫ কিলোমিটারের বেশি হাঁটতে পারেননি। এখন অবশ্য সেই গতি বাড়িয়েছেন। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত তিনি হেঁটে চলেছেন। রাত হলে ঠাঁই নিচ্ছেন কোনও আস্তানায়।

কিন্তু প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার সড়কপথ হেঁটে পেরোনোর চিন্তা কেন মাথায় এল তাঁর?

সুন্দর বলছেন, ‘‘প্রকৃতি আমার প্রিয়। তাই ঘুরে বেড়াতে খুব ভালবাসি। সেই প্রকৃতি, পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অথচ, প্রতিরোধের কোনও চেষ্টা করব না? এই চিন্তাই কিছু দিন ধরে মাথায় ঘুরছিল। তাই সবুজ প্রকৃতিকে বাঁচানোর বার্তা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে এই উপায় বেছে নিলাম। আর সেই ফাঁকে ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছেও পূরণ হবে।’’

অজানা পথে একা হেঁটে যেতে ভয় করছে? ফোনের ও-প্রান্ত থেকে সুন্দর জানালেন, হেঁটে চলার পথে ক্লান্তি ছাড়া এখনও বিশেষ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি। তা ছাড়া, যে পথ দিয়েই যাচ্ছেন, সেখানকার অচেনা স্থানীয় মানুষদের উৎসাহ তাঁকে উদ্দীপিত করে চলেছে। সেটাই তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছনোর ইচ্ছেকে জাগিয়ে রাখছে। সুন্দর বলেন, ‘‘যত হাঁটছি, এত মানুষের সমর্থন পাচ্ছি যে মনে হচ্ছে, সামনে এগোলে আরও তো কত মানুষ আর জীবনের বৈচিত্র দেখব। বদলে যাবে প্রকৃতির মেজাজও। সেই টানেই হেঁটে চলছি।’’

প্রকৃতিপ্রেমী যুবকের এক গোপন ইচ্ছেও আছে। লাদাখে তিনি যদি পৌঁছতে পারেন, দেখে আসতে চান খারদুংলা পাস এবং প্যাংগং লেক। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর খরচ তো বিপুল। এ দিকে সামর্থ্য বলতে সঙ্গে নিয়ে বেরোনো সাড়ে তিন হাজার টাকা! তা হলে কী ভাবে সম্ভব? সুন্দর জানান, অনেক বন্ধুবান্ধব আছেন। টাকা ফুরিয়ে গেলে তাঁদের সাহায্য পাওয়ার আশায় ভরসা রেখেছেন তিনি।

ইতিমধ্যেই তাঁর যাত্রাপথের বিবরণ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পরিচিতই পোস্ট করেছেন। সেই সব পোস্টের নীচে সুন্দরের প্রয়াসকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন অজানা-অচেনা অনেকে। বিরাটিতে সুন্দরের এক সময়ের প্রতিবেশী সাত্যকি রাহার কথায়, ‘‘ছোট থেকেই সুন্দরকে চিনি। খুব পরিশ্রমী এবং একরোখা ছেলে। মুখে বলা আর কাজে করে দেখানোর মধ্যে অনেক ফারাক। সেই ফারাকটাই মুছে দিচ্ছেন সুন্দর। ওঁর এই প্রয়াসকে কুর্নিশ জানাই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Ladakh Expedition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy