অভিযোগ: বরো চেয়ারপার্সন এবং তাঁর স্বামী পুর বিধিনিষেধকে হাতিয়ার করে প্রোমোটারদের একাংশের থেকে নানা ভাবে টাকা আদায় করছেন। প্রতীকী ছবি।
বিধাননগরের এক বরো চেয়ারপার্সন এবং তাঁর স্বামী তথা তৃণমূলের এক যুবনেতার বিরুদ্ধে নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে চিঠি গিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। পুর প্রশাসনের পাশাপাশি চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের কাছেও। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ওই বরো চেয়ারপার্সন এবং তাঁর স্বামী পুর বিধিনিষেধকে হাতিয়ার করে প্রোমোটারদের একাংশের থেকে নানা ভাবে টাকা আদায় করছেন।যদিও সব অভিযোগকে তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত বলেই দাবি করেছেন ওই দম্পতি। ওই চিঠিতে প্রেরকের কোনও নাম নেই। তাই অভিযুক্ত দম্পতির বক্তব্য, এতেই চক্রান্তের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভায় রূদ্ধদ্বার বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে বলে খবর। পুর মহলের কেউ কেউ অবশ্য মনে করছেন, ঘটনাটি দলীয় নেতাকর্মীদের একাংশের কোন্দলের ফল।
উল্লেখ্য, রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা এলাকার ওই বরোর অধীনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বেআইনি প্রোমোটিংয়ের সমস্যা রয়েছে। এলাকায় গুঞ্জন, সেখানে বহু নির্মাণ কাজেই নকশার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সে সবের উপরে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের মধ্যে টানাপড়েন লেগে থাকে। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, অশ্বিনীনগর এলাকার একটি ক্লাব, যেটির দুর্গাপুজো গত কয়েক বছরে কলেবরে বেড়ে কলকাতার পুজোগুলির সঙ্গে টক্কর দিচ্ছে— সেখানে প্রোমোটারদের থেকে টাকা আদায় করেন ওইযুবনেতার লোকজন। সংশ্লিষ্ট বরোর এক সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়। তাঁকে দিয়ে নির্মাণের কাজ বন্ধ করে নির্মাণস্থলে নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তাতে বাধ্য হয়ে প্রোমোটারদের অনেকেই ছুটে আসেন ওই দম্পতিরকাছে। এমনকি, ওই দম্পতি ইতিমধ্যে দামি গাড়ি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বরো চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমার বরোর প্রশাসন আমি কড়া হাতে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে চালাই। অনেকের তা পছন্দ নয়। তা-ই হয়তো উড়ো চিঠি দিয়েছেন। সৎ সাহস থাকলে প্রেরক তাঁর নাম লিখতেন।’’ অন্য দিকে, চেয়ারপার্সনের স্বামী তথা সেই যুবনেতার কথায়, ‘‘আসলে আমি বড় করে দুর্গাপুজো করি। তা-ই অনেকের গাত্রদাহ। আমাদের কোনও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বা গাড়ি নেই। আমার স্ত্রী বরো চেয়ারপার্সন হলেও বেসরকারি সংস্থায় উচ্চ পদে চাকরি করেন। আমাদের দুর্নীতি করে রোজগারের প্রয়োজন নেই।’’ ওই চিঠিতে বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যানের কাজের প্রশংসা করা হয়েছে। তাঁর অবশ্য দাবি, ‘‘ওই চিঠির ব্যাপারে কিছু জানি না। বর্তমান চেয়ারপার্সন ভাল কাজ করছেন।’’
উল্লেখ্য, অতীতে বিধাননগরে বিভিন্ন ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। পুরভোটের আগে ওই বরো সংলগ্ন একটি ওয়ার্ডে তথ্য ভাঁড়িয়ে শাসকদলের প্রার্থী তফসিলি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে একটি গোষ্ঠী অভিযোগ করেছিল। সেই অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূলের ‘টিকিট প্রত্যাশী’ এক নির্দল প্রার্থী। যদিও পরে তিনিই আবার ভুয়ো পরিচয় দিয়ে বসবাসের অভিযোগে গ্রেফতার হন।
দলীয় কোন্দলের নজির আরও আছে। দিনকয়েক আগেই সল্টলেকের এক তৃণমূল নেতা এবং রাজারহাটের আর এক তৃণমূল নেতা দু’টি ভিন্ন অনুষ্ঠানে একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দাগেন। সল্টলেকের ওই নেতার সঙ্গে লেক টাউন এলাকার আর এক নেতার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথাও বিধাননগরের রাজনীতিতে চর্চিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy