Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
coronavirus

পুরো হাজিরা! ইছাপুর রাইফেলে সংক্রমিত ৩২ কর্মী

কর্মচারী ইউনিয়নগুলি একাধিক বার কর্মী সংখ্যা কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানালেও তাতে কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ।

ছবি সংগৃহীত।

ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৪:১৫
Share: Save:

একের পর এক কর্মী সংক্রমিত হচ্ছেন। এই মুহূর্তে সংখ্যাটা ৩২। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাঁদের পরিবারেও। অভিযোগ, তবুও অবাধে চলছে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি। শুধু তা-ই নয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে একশো শতাংশ হাজিরা নিয়েই চলছে কারখানা! আপাতত একটি শিফটে কমবেশি ৩৪০০ কর্মী একসঙ্গে কাজ করছেন।

কর্মচারী ইউনিয়নগুলি একাধিক বার কর্মী সংখ্যা কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানালেও তাতে কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ। জেলাশাসক এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ইউনিয়নগুলির তরফে চিঠি লিখে হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। কারণ, ওই কারখানায় ইতিমধ্যেই ৩২ জন কর্মী সংক্রমিত বলে অভিযোগ। প্রায় একই অবস্থা ইছাপুর মেটাল অ্যান্ড স্টিল কারখানার। সেখানকারও বেশ কয়েক জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কর্মীদের অভিযোগ, সেখানেও একশো শতাংশ হাজিরার নির্দেশ রয়েছে।

ইছাপুর রাইফেল কারখানা উত্তর ব্যারাকপুর পুর এলাকায়। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সংস্থাটি জুন মাসের প্রথম দিন থেকে কাজ শুরু করেছিল। প্রথম দিকে সরকারি নির্দেশ মেনে ২০ শতাংশ কর্মী নিয়েই কাজ হচ্ছিল। সপ্তাহ দুয়েক পর থেকেই সব কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়। কারখানা সূত্রের খবর, এই কারখানার নিরাপত্তা রক্ষার ভার যাঁদের উপরে, সেই ডিফেন্স সিকিউরিটি বিভাগের কয়েক জন প্রথমে সংক্রমিত হন। তার পর থেকে কারখানার প্রায় সব বিভাগেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ডিফেন্স সিকিউরিটি বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা এলাকায়।

কারখানার মূল অংশে আবার দু’টি বিভাগ রয়েছে। ব্যারেল সেকশন এবং সিএলসি ১ সেকশন। প্রথম অবস্থায় সেখানে সংক্রমণ ছড়ায়নি বলেই জানিয়েছেন কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, জুন মাসের মাঝামাঝি যখন নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরা পরপর সংক্রমিত হচ্ছিলেন, তখনই কর্মী কমিয়ে কাজ জারি রাখার আবেদন জানান তাঁরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা না করায় সংক্রমণ ছড়ায় ওই দু’টি বিভাগে। ফলে বর্তমানে আতঙ্কিত কর্মীরা।

‘অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি ন্যাশনাল মজদুর ইউনিয়ন’ থেকে গত মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কারখানার মোট ৩২ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত। ফলে কর্মীদের সংস্পর্শে থেকে তাঁদের পরিবারের সদস্যেরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। লোকাল ট্রেন বন্ধ, বাসও ঠিক মতো চলছে না। প্রায় একশো কিলোমিটার দূর থেকে আসতে হয় অনেক কর্মীকে। তাঁরা মোটরবাইকে এলেও কাছাকাছি দূরত্ব থেকে আসা অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন গণপরিবহণ ব্যবহারে।

জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের সব স্তরে চিঠি দিয়েছে ‘ইছাপুর অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি মজদুর ইউনিয়ন’ও। তাদের চিঠিতে বলা হয়েছে, কারখানার কর্মীরা যেমন আক্রান্ত হচ্ছেন, তেমনই কারখানা সংলগ্ন ইছাপুরের বিভিন্ন এলাকায় হু হু করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এই অবস্থায় যদি কর্মী সংখ্যা না কমানো হয়, তা হলে বেশির ভাগ কর্মী সংক্রমিত হবেন বলে তাদের আশঙ্কা। কারখানা কর্তৃপক্ষ যে হেতু পদক্ষেপ করছে না, তাই তারা রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছে। ইউনিয়নের দাবি, দু’টি কারখানা এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করুক রাজ্য।

এ প্রসঙ্গে অভিমত জানতে ইছাপুর রাইফেল কারখানার জেনারেল ম্যানেজার দিলীপকুমার মহাপাত্রকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। এসএমএস-এর উত্তরও দেননি। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ বলেন, “ওই কারখানার অনেক কর্মীই আক্রান্ত হয়েছেন। আমার পুর এলাকায় থাকেন এমন ১৭ জনের মতো ওই কারখানার কর্মী করোনা সংক্রমিত। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাটি আমাদের কিছু জানায় না।”

উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছুই জানাননি। ওদের ইউনিয়ন থেকে কী চিঠি এসেছে, আমি দেখছি। কত শতাংশ কর্মী নিয়ে সংস্থা কাজ করছে, তা-ও দেখা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Ichapur Rifles
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy