বান্টি রায়।
পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার কারণে মেয়েকে শাসন করেছিলেন বাবা-মা। সন্ধ্যায় মেয়েকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন দু’জনে। ফিরে এসে মেয়ে, বান্টির (১০) ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা।
শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে নিউ টাউনের তারুলিয়ার দু’নম্বর লেনে। পুলিশ জানায়, ওই এলাকায় একটি বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে এবং ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকেন কাটোয়ার বাসিন্দা বাবু রায়। তাঁদের মেয়ে বান্টি স্থানীয় স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। বাবু পেশায় গাড়িচালক। তাঁর স্ত্রী টিঙ্কু রায় স্থানীয় একটি স্কুলে কাজ করেন। দু’জনই সকালে কাজে বেরিয়ে যেতেন। প্রতিবেশীরা জানান, বান্টি মাঝেমাঝে স্কুল যেত না। তখন তার বাবা-মা বকতেন। পড়াশোনায় অমনোযোগী হলেও শাসন করতেন। শনিবারও একই ঘটনা ঘটেছিল। ওই দিন স্কুলে যায়নি বান্টি। প্রতিবেশী নিরঞ্জন প্রামাণিক বলেন, ‘‘মেয়ে স্কুল যায়নি দেখে দুপুরে বাড়ি ফিরে বাবু বলেছিলেন, আমি আর কিছু বলব না। তোর মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যা বলার বলবে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিকেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার তাড়া থাকায় কাজ থেকে ফিরে বেশি ক্ষণ বাড়িতে ছিলেন না টিঙ্কু। স্বামীর সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে চলে যান। সন্ধ্যায় সময় বাড়ি ফিরে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। পুলিশ জানায়, বান্টির পায়ের পাতা চেয়ার স্পর্শ করে ছিল। তড়িঘড়ি বান্টিকে নামিয়ে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রবিবার আর জি কর হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
এ দিন হাসপাতাল চত্বরে মেয়ের শোকে কাতর বাবা বলেন, ‘‘আমার সুখের সংসার ছিল। দুই সন্তানকে মানুষ করার জন্য স্বামী, স্ত্রী দু’জনেই চাকরি করি। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!’’ ছেলে কুণাল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। সে আপাতত কাটোয়ার
বাড়িতে আছে। বান্টির পিসি বলেন, ‘‘মা এসে বকবে, এই ভয়েই এমন করল।’’ মা আফশোস করেন, কেন মেয়েকে সঙ্গে করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেন না। টিঙ্কু জানান, তাঁর বড় ননদের মেয়ে বিমানসেবিকা। তাঁর মতো বান্টিও বিমানসেবিকা হতে চেয়েছিল। টিঙ্কু বলেন, ‘‘বিমানসেবিকা হতে গেলে তো পড়াশোনা করতে হবে। সেটাই বলতাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy