ধ্বংসস্তূপে চলছে উদ্ধারকাজ। বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র।
বিপজ্জনক ঘোষিত হয়েছিল আগেই। তবু ভাঙার ব্যবস্থা নেয়নি পুরসভা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে ফের ধসে পড়ল শহরের আরও একটি বড় বাড়ি, যে ঘটনায় মৃত্যু হল এক যুবকের। এই ঘটনায় ফের প্রমাণ হল, বিপজ্জনক ঘোষণা হলেও সে বাড়ি ভাঙায় কখনওই উদ্যোগী হয় না পুরসভা।
বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বড়বাজারের ৭৬ নম্বর যমুনালাল বজাজ স্ট্রিটে। পুলিশ জানায়, দুপুর ২টো নাগাদ তিনতলা বাড়িটির উপরের দু’টি তলা ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নীচে পাঁচ জন চাপা পড়েন। তাঁদেরই এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় পুরসভার গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন। ৩১ অগস্ট প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিটের একটি বাড়ির অংশ ভেঙে পড়েছিল। তখনও পুরসভার ভূমিকা প্রশ্ন নিয়ে ওঠে।
বছর ছয় আগেই যমুনালাল বজাজ স্ট্রিটের বাড়িটি বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত হয়। এ দিন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০৮ সালেই ‘বিপজ্জনক’ বোর্ড টাঙানো হয়। বিল্ডিং আইন অনুযায়ী মালিককে নোটিস পাঠানো হয়। তবু বাড়ির ছাদে কয়েক জন ব্যবসা চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ পুর-কর্তৃপক্ষের। পুর-আইন অনুযায়ী বিপজ্জনক বাড়ি অবিলম্বে সারানো এবং প্রয়োজনে বসবাসকারীদের সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে কাপড়ের দোকান ও গুদাম আছে। বাড়ির ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যস্ত সময়ে বিপদের আঁচ পেয়ে তাঁরা নীচে নামার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। কিন্তু ততক্ষণে বাড়ি ধসে পড়ছে। হুড়োহুড়িতে কয়েক জন আহতও হন।
ঘটনার পরে আসে পুলিশ, দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলার দল ও পুরকর্তারা। ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে উদ্ধার হন পাঁচ জন। তাঁদের মেডিক্যাল কলেজে নেওয়া হলে শাহিদ হোসেন বুরগুঞ্জা (২৫) নামে পিলখানার বাসিন্দা এক যুবককে তখনই মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকেরা। বাকি চার জন হাসপাতালে ভর্তি।
এ দিনের ঘটনার পরে পুরসভার বিল্ডিং দফতরের ডিজি (২) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “ওই বাড়ির একটা অংশ তিনতলা, আর একটি অংশ একতলা। একতলার ছাদে অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে ত্রিপলের ব্যবসা চলত। বিপজ্জনক নোটিস দেওয়ার পরেও তা বন্ধ হয়নি।” স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষকুমার পাঠক বলেন, “নোটিস টাঙিয়েই যদি পুরসভার কাজ শেষ হয়, তবে এমন ঘটনা আরও ঘটবে।” তাঁর প্রশ্ন, “দুর্ঘটনার পরে পুরসভা যদি বাড়িটি ভাঙতে পারে, তা হলে আগে ভাঙতে অসুবিধা কোথায়?” যদিও মেয়রের বক্তব্য, “নোটিস দিতে পারি। বাড়ি থেকে লোকজন সরানোর এক্তিয়ার পুরসভার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy