Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sitaram Yechury

বঙ্গে তৃণমূল-সঙ্গ নয়, বোঝাল কেন্দ্রীয় কমিটি

রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতারা কী ভাবে পটনা বা বেঙ্গালুরুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসছেন, এই প্রশ্ন তুলে প্রচারে নেমে গিয়েছে বিজেপি।

Sitaram Yechury

সীতারাম ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৩৫
Share: Save:

রাজ্যে গণতন্ত্র ধ্বংস করার দায়ে যাদের কাঠগড়ায় তুলে নিয়মিত প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে, জাতীয় স্তরে তাদেরই পাশে থেকে বিজেপি-বিরোধিতার কৌশল নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সরব হয়েছিল সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড। বাংলায় দলের জন্য ‘অস্বস্তিকর পরিস্থিতি’র কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। সেই সঙ্গেই স্পষ্ট করে দেওয়া হল, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলি রাজ্যে রাজ্যে আলোচনা করে বিজেপি-বিরোধী কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা করলেও বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসবে না সিপিএম। বামেদের কর্মসূচিও চলবে নিজেদের মতো।

দিল্লিতে হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎ ভবনে রবিবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠকের শেষ দিনে জবাবি ভাষণে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ফের ব্যাখ্যা করেছেন, দেশের সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে রক্ষা করতে বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন দল এক জায়গায় এসেছে। বিজেপিকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। তবে রাজ্যভিত্তিক ‘বাস্তব পরিস্থিতি’র নিরিখেই সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জাতীয় পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলা ও কেরলের পরিস্থিতি মেলানো মুশকিল। সূত্রের খবর, ইয়েচুরি উল্লেখ করেছেন বাংলার শাসক দল তৃণমূলকে নিয়ে এই রাজ্যের নেতাদের ‘উদ্বেগ’ সঙ্গত। এই সূত্রেই তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় স্তর থেকে ঠিক করে দিয়ে নির্বাচনী আঁতাতের কথা তো আসছেই না। রাজ্যের পরিস্থিতির নিরিখে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের কোনও আলোচনা বা যৌথ কর্মসূচিও হবে না। সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু কর্মসূচির সিদ্ধান্তও হয়েছে এ বারের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে। সংযুক্ত কিসান মোর্চা এবং বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি আগেই কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গণ-সংগঠনের ওই প্রতিবাদে সিপিএমের নেতা-কর্মীরাও শামিল হবেন।

রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতারা কী ভাবে পটনা বা বেঙ্গালুরুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসছেন, এই প্রশ্ন তুলে প্রচারে নেমে গিয়েছে বিজেপি। রাজ্যে পঞ্চায়েত হিংসায় শাসক দলের হাতে বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেসের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তাদের বাড়তি হাতিয়ার হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আরও এক ধাপ এগিয়ে নিচু তলার বাম কর্মী-সমর্থকদের প্রয়োজনে আলাদা মঞ্চ গড়ে তৃণমূল-বিরোধিতায় নামার ডাক দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় রাজ্যে দলের উভয় সঙ্কটের কথাই কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে তুলে ধরেছিলেন রবীন দেব, সুজন চক্রবর্তী, অমিয় পাত্র, আভাস রায়চৌধুরী, দেবলীনা হেমব্রমেরা। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল ‘বিশ্বাসযোগ্য’ নয়, এই কথা বলেও আবার বিজেপি-বিরোধিতায় তাদের সঙ্গে থাকার অর্থ কী— এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে বিড়ম্বনার প্রসঙ্গ তাঁরা তুলেছিলেন। বাংলায় সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার ভূমিকা কী ছিল, উঠেছিল সেই প্রসঙ্গও। জবাব দিতে গিয়ে সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের রাজনৈতিক লাইনে কোনও পরিবর্তন হয়নি, হচ্ছে না। বাংলা বা কেরলের রাজনৈতিক পথ নিয়ে সম্মেলনে যা ঠিক হয়েছে, তা বহাল থাকছে।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল, এই দু’দলের মধ্যে কোনও একটাকে সঙ্গে নিয়ে অন্যটার মোকাবিলা করা যায় না। ওই দুই দলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে এককাট্টা করার লক্ষ্যে বাংলায় দল কাজ করে যাবে। কেরলে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতাও হবে না।’’ যার প্রেক্ষিতে দলেরই কেউ কেউ বলছেন, তার অর্থ দিল্লি এবং রাজ্যে দু’রকম ‘কর্তব্য পালনে’র লাইন বহাল থাকবে!

অন্য বিষয়গুলি:

Sitaram Yechury CPM BJP opposition alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy