জয়প্রকাশ মজুমদার
দলে গুঞ্জন ছিলই। তা সত্যি প্রমাণ করে রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে করিমপুর উপনির্বাচনে প্রার্থী করল বিজেপি। ফলে, দু’দিন দেরিতে হলেও ভোটের মাঠে নামছে বিজেপি। আজ, রবিবারই পুরোদমে তাদের প্রচারে নামার পরিকল্পনা।
তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেস জোট বৃহস্পতিবার প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। দলীয় প্রার্থীর নাম জানতে না পেরে হা-হুতাশ করছিলেন বিজেপি কর্মীরা। দেওয়াল লিখনও কার্যত থমকে ছিল। জয়প্রকাশ সম্প্রতি করিমপুরে আসা-যাওয়া করলেও ‘পাকা খবর’ ছিল না। শনিবার প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিজেপির জাতীয় কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা দেশের চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম জানান। জয়প্রকাশই প্রার্থী জেগে চাঙ্গা হয়ে ওঠেন করিমপুরের নেতাকর্মীদের বড় অংশ।
বাকি দুই দল যাঁদের প্রার্থী করেছে তাঁরা দু’জনেই তেহট্ট মহকুমার লোক। তৃণমূল প্রার্থী তো করিমপুরেরই, এখন থাকেন কৃষ্ণনগরে। কলকাতা-নিবাসী জয়প্রকাশকে যাতে ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে বিরোধী প্রচার না-হয়, তার জন্য এ দিন থেকেই সওয়াল করতে শুরি করেথেন বিজেপি। এবং তাঁদের সম্বল জয়প্রকাশের মামার বাড়ি।
জয়প্রকাশ মজুমদার (৬২)
পড়াশোনা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্থ সায়েন্স ও মেটিরিয়াল সায়েন্সে এমএসসি
রাজনীতি: ছাত্রজীবন থেকেই কংগ্রেসের রাজনীতিতে যুক্ত
২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগদান
২০১৫ থেকে রাজ্য সহ-সভাপতি।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, জয়প্রকাশের জন্মস্থান করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বাগচী যমশেরপুর গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতে। কংগ্রেস আমলে তাঁর বাবা জগন্নাথ মজুমদার জেলা কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন। চাপড়া, নাকাশিপাড়া ও কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে চার বার বিধায়ক হয়েছেন। জয়প্রকাশের পড়াশোনা কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় যান। এখন কর্মসূত্রে সেখানেই থাকেন।
অর্থাৎ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের ‘বহিরাগত’ তকমা ঘোচাতে তৃণমূল যেমন তাঁর নদিয়ায় আত্মীয়-যোগের কথা প্রচার করত, তিন বছর বাদে তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসন দখল করতে বিজেপিও সেই রাস্তা ধরেছে। এতে যাঁরা ‘প্রকৃত ভূমিপুত্র’, স্থানীয় সেই সব নেতাকর্মীরা কি খুশি?
দলের নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য উদয় সিহির মতে, জয়প্রকাশের মতো প্রতিষ্ঠিত নেতাকে প্রার্থী করে দল ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তাঁর নাম ঘোষণার পরে কর্মীদের মনোবল বেড়ে গিয়েছে। জেলা কমিটির আর এক সদস্য মৃগেন বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য কমিটি কেন্দ্রীয় স্তরে জয়প্রকাশদার নাম সুপারিশ করার পরে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, উনি প্রার্থী হচ্ছেন। করিমপুর কেন্দ্রে এই প্রথম আমাদের জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ওঁকে জয়ী করে আমরা করিমপুর থেকে বিধানসভায় পাঠাব।”
বিজেপির জেডপি-৪ মণ্ডল কমিটি সদস্য আনন্দ ভৌমিক বলেন, “বিগত কয়েক মাসে বেশ কয়েক বার উনি দলীয় কর্মসূচিতে করিমপুর এসেছেন। এলাকার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কাছে উনি ইতিমধ্যেই পরিচিত। উনি প্রার্থী হওয়ায় এলাকার সকল স্তরের কর্মীরাই খুশি।”
গত বিধানসভা নির্বাচনে করিমপুর কেন্দ্রে বিজেপির নামগন্ধ ছিল না বললেই চলে। দীর্ঘদিনের এই বামদুর্গে তৃণমূল-বিরোধী ভোট বিজেপির দিকে সরে যাওয়াতেই গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে ছাপ ফেলতে পেরেছে বিজেপি। তার পরেও অবশ্য লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা এলাকায় ১৪ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। সেই ব্যবধান পার করে বিজেপির জেতার কোনও সম্ভাবনা আছে? বিশেষ করে বামেরা যখন দাবি করছে, তাদের ভোট আবার তাদের কাছেই ফিরছে?
সন্ধ্যায় জয়প্রকাশ দাবি করেন, গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি যা ভোট পেয়েছিল, লোকসভা নির্বাচনে তার চেয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার বেড়েছে। অর্থাৎ সূচক ঊর্ধ্বমুখী! স্থানীয় প্রার্থী না-দিয়ে এই প্রান্তিক জায়গায় তাঁকে কেন দাঁড় করাতে গেল বিজেপি? জয়প্রকাশের দাবি, ‘‘আমি নদিয়ারই ছেলে। এখানেই পড়াশোনা। ক্রিকেট ও হকিতে জেলার প্রতিনিধিত্ব করেছি। আমি স্থানীয় প্রার্থী হিসাবেই জিতব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy