সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। ফাইল চিত্র।
ইডির বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ তুললেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। আদালতের নির্দেশে আপাতত ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে রয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই আদালতে তাঁর অভিযোগ, ইডি তাঁকে দোষ কবুল করে নেওয়ার জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছে।
বিচারভবনে ‘কালীঘাটের কাকু’ আবেদন করেছেন, ইডি হেফাজতে অসাংবিধানিক ভাবে তাঁকে ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলি স্বীকার করে নেওয়ার জন্য গোয়েন্দারা তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছেন।
নিজের আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’। অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁকে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমনটাই জানিয়েছেন সুজয়ের আইনজীবী সেলিম রহমান। আইনজীবীর সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দেখা করার অনুমতি চেয়েছেন সুজয়। আইনজীবী মারফত জানিয়েছেন, ‘কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর, ১৯৭৩’-এর ৪১ডি ধারা অনুযায়ী ইডির জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইনজীবীকে পাশে পাওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁর।
যদিও এ প্রসঙ্গে ইডির দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন ‘কালীঘাটের কাকু’ তাঁর আইনজীবী এবং কন্যার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন।
‘কালীঘাটের কাকু’কে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারক। আদালত জানিয়েছে, ইডি হেফাজতে থাকাকালীন নির্দিষ্ট সময় অন্তর তিনি তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
আগে যা ঘটেছে
গত ৩১ মে ‘কালীঘাটের কাকু’কে গ্রেফতার করেছে ইডি। আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। ১৪ জুন পর্যন্ত ইডি হেফাজতে থাকতে হবে সুজয়কে। রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই গ্রেফতার করে বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলকে। তাঁর মুখেই প্রথম ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা শোনা যায়। সিবিআই সুজয়কে দু’বার তলব করে। প্রথম বার সিবিআই দফতরে গিয়ে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরের বার নিজের আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠিয়েছিলেন। গত ২০ মে সুজয়ের বেহালার ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ বহু জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। ওই দিনই নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সুজয় এক সময় অভিষেকের অফিসে কাজ করতেন।
তার আগে, গত ৪ মে সুজয়ের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। সেই তল্লাশি অভিযানে সুজয়ের বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। তিনি অবশ্য দাবি করেছিলেন, তাঁর বোন হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসার বিল মেটানোর জন্য ওই অর্থ তুলেছিলেন।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তাপস সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছিলেন, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কুন্তল বলতেন, ‘‘কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’ যদিও কুন্তল দাবি করেছিলেন, তিনি ওই ‘কাকু’কে চেনেন না। কুন্তল এ-ও দাবি করেন, যে সুজয়কে নিয়ে আলোচনা চলছে, তিনি ‘কালীঘাটের কাকু’ নন। সুজয় নিজে দাবি করেছিলেন, কেন তাঁকে ‘কালীঘাটের কাকু’ বলা হচ্ছে, তা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁর কাছে কোনও টাকা জমা পড়েনি বলেও দাবি করেন সুজয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার কর্মস্থল নিউ আলিপুর। ‘কালীঘাটের কাকু’ কথাটা কোথা থেকে এল, আমার পক্ষে সেটা বলা সম্ভব নয়। যাঁরা এটা বলছেন, তাঁরাই এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy