করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা। ফাইল চিত্র।
তখনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। মোবাইলে কথা চলছিল। আচমকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ওই যাত্রীর হাত থেকে ফোনটি পড়ে যায়। ও প্রান্তে থাকা তাঁর আত্মীয় শুনতে পান, বিকট আওয়াজ। বুঝতে পারছিলেন, কিছু একটা ঘটেছে। পরক্ষণেই আর্তনাদ— বাঁচাও, বাঁচাও। সমস্বরে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জালাল মোল্লা কিছু পরে শুনেছিলেন অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের শব্দও। সেই বিভীষিকার মধ্যেও ফোনটা চালু ছিল ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিট।
এই মুহূর্তে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর মহিউদ্দিন মোল্লা। সোমবার তাঁর দাদা জালাল জানান, কেরলে ঠিকাদারদের অধীনে কাজ করতে যাচ্ছিলেন ভাইয়েরা। দলে ছিলেন ১১ জন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনার খানিক আগেই জালালের ভাই মহিউদ্দিনের সঙ্গে কথা শুরু হয় তাঁদের এক আত্মীয়ের। ওই আত্মীয় ছিলেন জালালদের বাড়িতেই। তিনিই প্রথমে বুঝতে পারেন, বড় কিছু হয়েছে। তাঁর প্রতিক্রিয়া দেখে জালালরাও ফোনের কাছে চলে যান। জালাল বলছিলেন, ‘‘ফোনে আওয়াজ শুনেই বুঝেছিলাম বড় বিপদ হয়েছে। ভীষণ ভয় করছিল। মনে হচ্ছিল, ভাইয়ের কিছু হল না তো!’’
১১ জনের ওই দলের মধ্যে এখনও দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাকি ন’জনের মধ্যে পাঁচ জন বাড়ি চলে গিয়েছেন। চার জন চিকিৎসাধীন। জালাল বলছিলেন, ‘‘দুর্ঘটনার রাতেই আমরা গাড়ি নিয়ে বালেশ্বর রওনা দিই। ভোরের দিকে পৌঁছই। ভাইকে চোখে না দেখা পর্যন্ত দুশ্চিন্তা কাটেনি।’’
মহিউদ্দিন বলছেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে মোবাইলটা হাত থেকে ছিটকে গিয়েছিল। কামরা উল্টে গিয়েছিল। আমি চাপা পড়ে গিয়েছিলাম। তার পর কী হয়েছে, আর মনে নেই।’’ জালাল বলেন, ‘‘ভাই যে জায়গাটায় পড়েছিল, কেউ দেখতে পায়নি। দেড় ঘণ্টা ধরে চিৎকার করেছে। কামরার দরজা ওর পায়ে আটকে ছিল। স্থানীয় এক মহিলা টর্চ দিয়ে দেখেন যে, ভাই আটকে রয়েছে। পরে স্থানীয়রাই জানলার রড ভেঙে বার করেছেন মহিউদ্দিনকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy