ববিতা সরকারের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে চাকরি পেয়েছিলেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন। এই অভিযোগ জানিয়ে মামলা-মোকদ্দমার পথে হেঁটেছিলেন ‘লড়াকু’ ববিতা। জয়ও পেয়েছিলেন। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অঙ্কিতার চাকরি বাতিল হয়েছিল। সেই চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা। মঙ্গলবার সেই চাকরিই হারাতে হল তাঁকে। আর এই নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ধমক খেলেন ববিতা।
চাকরি বাতিলের নির্দেশ শোনার পরই কেঁদে ফেলেন ববিতা। তাঁকে টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই নির্দেশ শোনার পর কাঁদতে কাঁদতে ববিতা বলেন, ‘‘আমি ভুলটা জানতাম না। আমার চাকরি চলে যাচ্ছে। কিন্তু টাকাটা ফেরত দেওয়ার জন্য একটু সময় দেওয়া হোক। এখন আমি ১১ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে পারব। আমি একটা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনেছি। বাকি টাকা ফেরত দিতে আমার একটু সময় লাগবে। তিন মাস সময় দেওয়া হোক।’’
ববিতাকে ধমক দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনি আদালতকে যে ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে পরিচালনা করেছেন, চাইলে আমি কড়া পদক্ষেপ করতে পারতাম। এই ক’দিনে আপনি যা বেতন পেয়েছেন তা ফেরত নেওয়া হচ্ছে না। এটুকু সান্ত্বনা নিয়ে হাই কোর্ট থেকে যান। পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করুন। যা হয়েছে তা আপনার ভুলের জন্য।’’
আগামী ৬ জুনের মধ্যে ববিতাকে ১৫ লক্ষ টাকা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী বুধবারের মধ্যে তাঁকে ১১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তবে এত দিনে চাকরির জন্য যে বেতন পেয়েছেন ববিতা, সেই টাকা তাঁকে ফেরত দিতে হবে না। অঙ্কিতার চাকরি যাওয়ার পর তাঁর টাকা বিভিন্ন কিস্তিতে ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ মতো যে টাকা পেয়েছিলেন ববিতা, সেই টাকা ফেরত দিতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ববিতাকে মোট ১৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৪৩ টাকা ফেরত দিতে হবে।
কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে চাকরি করতেন অঙ্কিতা। সেই চাকরি পান ববিতা। সেই স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন ববিতা। এ বার ববিতার চাকরি পাচ্ছেন শিলিগুড়িরই বাসিন্দা অনামিকা বিশ্বাস রায়। ববিতার চাকরি বাতিলের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনামিকা। অভিযোগ ছিল, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে আবেদন করার সময় ববিতার স্নাতক স্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। যার ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। ববিতার আবেদনপত্র অনুযায়ী, স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ, স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব ৬০ শতাংশ বা তার বেশি উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনপত্রে। অর্থাৎ, ‘ভুল’ সেখানেই! যে কারণে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ গণনায় ভুল হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy