Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘মমতার ডাকে দিল্লি চলো’, লোকসভার আহ্বান যাত্রাপালায়

শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘নাটকে লোকশিক্ষে হয়’। অনেকটা সেই কায়দায় এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বাণী ও আদর্শ’ প্রচারে উদ্যোগী হয়েছে চিৎপুরের একটি যাত্রা সংস্থা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

দেবারতি সিংহ চৌধুরী ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘নাটকে লোকশিক্ষে হয়’। অনেকটা সেই কায়দায় এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বাণী ও আদর্শ’ প্রচারে উদ্যোগী হয়েছে চিৎপুরের একটি যাত্রা সংস্থা।

‘‘উনিশে পা দিয়ে উনিশের জন্য ব্রিগেড হবে। ভারত দখলের ডাক দেওয়া হবে ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেড থেকে। সব দলকে আমরা নিয়ে এসে বিরোধী ঐক্যকে সংহত করব।’’— ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বলেছিলেন মমতা। তৃণমূলনেত্রীর আহ্বানকে পাথেয় করে চিৎপুরের ওই সংস্থার যাত্রা, ‘মমতার ডাকে দিল্লি চলো’।

এই ধরনের যাত্রা কেন? সংস্থাটির মতে, যাত্রাশিল্প ক্রমশই ক্ষয়িষ্ণু। এই ধরনের যাত্রায় দর্শককে সহজেই টানা যায়। আবার সরকারের উন্নয়নের কথাও মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া যায়। কয়েকদিন আগে ঝাড়গ্রামের সভা থেকে তাঁর উপর বিশ্বাস না হারানোর যে বার্তা মমতা দিয়েছেন, তা-ও যাত্রার মাধ্যমে তুলে ধরতে চান সংস্থার কর্তারা। যাত্রাটির পরিচালক উত্তম মাইতির বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানকে নিয়ে যাত্রা হলেও তা দেখতে তৃণমূলের পাশাপাশি অন্য দলের লোকজনও আসবেন। প্রতিটি শো’র মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে তিন-চারজনও যদি তৃণমূলের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেটাই বড় প্রাপ্তি।’’ উল্লেখ্য, যাত্রাটির প্রযোজক আশিস প্রামাণিক তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত।

যাত্রার সঙ্গে ২৮ বছর ধরে যুক্ত বেহালার বাসিন্দা সীতা ঘোষ এই যাত্রাতে মমতার চরিত্রে অভিনয় করবেন। যেখানে তিনি বলছেন, ‘গো রক্ষকের মুকুট পরে দলিতদের উপর অত্যাচারের চাবুক হাতে এগিয়ে চলছে এই সরকার (বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার)। দেশে যেন বিশৃঙ্খলার জোয়ার। ভারতের নেতৃবর্গের কাছে আমার আহ্বান প্রতিবাদের হাতিয়ার নিয়ে দিল্লি চলো।’

আরও পড়ুন: জাতীয় প্রতিযোগিতা বর্জনেই আগ্রহী বঙ্গ!

তৃণমূলনেত্রীর ছাত্রাবস্থা থেকে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মাটি কামড়ে পড়ে থাকা—এসব নিয়ে আগেই ‘মা-মাটির লড়াই’ এবং ‘বাংলার মসনদে মমতা’ নামক যাত্রাতে অভিনয় করেছেন সীতা। মমতার চরিত্রকে মঞ্চে ফুটিয়ে তুলতে বাড়ির কাছে কোনও সমাবেশ কিংবা পথচলতি কোথাও তৃণমূলনেত্রীর সভাতে দৌড়ে চলে যান সীতা। টিভিতেও খুঁটিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রীর চলনবলন। কেমনভাবে শাড়ির আঁচল কাঁধে দেন তৃণমূলনেত্রী, ব্যাগই বা কেমনভাবে নেন, চটিই বা কিভাবে পড়েন—সবই অনুকরণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন তিনি। সীতার কথায়, ‘‘দিদি ভূমিকায় অভিনয়ে সাফল্য যেমন মিলেছে, তেমনই পরিচিতি বেড়েছে। অন্য ভূমিকায় অভিনয় করতে খুব একটা ইচ্ছা করে না।’’ অন্য সংস্থাতে থাকলেও শুধুমাত্র মমতার চরিত্রে অভিনয়ের টানেই নতুন সংস্থায় অর্থাৎ ‘দিল্লি চলো’র যাত্রার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন একদা মমতার হাত থেকে সেরা শিল্পীর পুরস্কার পাওয়া সীতা। একবার নিজের জন্মদিনে ‘দিদি’র শুভেচ্ছা পেয়েছেন সীতা।

মমতার পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারীর চরিত্রও এই যাত্রায় দেখা যাবে। সেক্ষেত্রে নবান্নের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী তথা যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেও কথা বলতে চান সংস্থাটির কর্তারা। লোকসভার ভোটের কয়েকমাস আগে পুজোর পরেই ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা মঞ্চস্থ হবে। রাজ্যজুড়েই নয়, প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে দু’বার যাত্রা মঞ্চস্থ করার ইচ্ছা সংস্থার। আপাতত যাত্রাটির চিত্রনাট্য লেখার কাজ চলছে বলে জানান পরিচালক।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE