Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিল্পায়নে বাধা সরাতে ডাক দিলেন জেটলি

শিল্পায়নই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ। আর সেই পথ মসৃণ করতে হলে রাজনীতিতে শুভবুদ্ধির উদয় হওয়া দরকার। কলকাতায় শুক্রবার সিআইআই এবং সুরেশ নেওটিয়া সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর লিডারশিপ আয়োজিত আলোচনাসভায় এসে এই বার্তাই দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৪
Share: Save:

শিল্পায়নই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ। আর সেই পথ মসৃণ করতে হলে রাজনীতিতে শুভবুদ্ধির উদয় হওয়া দরকার। কলকাতায় শুক্রবার সিআইআই এবং সুরেশ নেওটিয়া সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর লিডারশিপ আয়োজিত আলোচনাসভায় এসে এই বার্তাই দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এ দিন প্রথম সুরেশ নেওটিয়া স্মারক বক্তৃতায় জেটলি অভিযোগ করেন, মুক্ত বাণিজ্যের পথে যেতে কংগ্রেসের দ্বিধা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। সেই জড়তা কাটানোর জন্য যে-ই বিশ্বায়নের প্রক্রিয়া শুরু হল, সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে সংস্কারে রাশ টানাও শুরু হয়ে গেল।

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের বক্তব্য, সংসদের বাজেট অধিবেশন আসন্ন। ওই অধিবেশনে কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখে সরকারকে পড়তে হবে বলে ধরেই নিয়েছেন জেটলিরা। সে জন্যই আগেভাগে কংগ্রেসকে দোষারোপের সুর চড়িয়ে রাখলেন অর্থমন্ত্রী।

জেটলির বক্তব্য, স্বাধীনতার পর প্রথম দিকে দেশের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু সাত এবং আটের দশকে বিপুল সম্ভাবনা ছিল, যা কাজে লাগানো যায়নি। সেই সময় দেশ রক্ষণশীল অর্থনীতির রাস্তা আঁকড়ে থেকেছে। ফলে যাবতীয় অগ্রগতি থমকে গিয়েছে। এর পর উপায়ান্তর না দেখে ১৯৯১ সালে উদার অর্থনীতির পথে হাঁটা শুরু হয়েছে। কিন্তু খুব বেশি এগোনো যায়নি। জেটলির কথায়, ‘‘আসলে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও এমন একটা দলের সদস্য, যারা নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতিতে বিশ্বাস করে।’’ এই প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, সেই সময় অর্থনীতি উদার হওয়ায় বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে যে টান পড়েছিল, তা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করে। কিন্তু একই সঙ্গে অর্থনীতির ধাঁচটা নতুন বলে অজানার প্রতি ভয় কাজ করতে থাকে। ফলে সংস্কারের গতিতে রাশ টানা হয়। মনমোহন সিংহ ওই নয়া অর্থনৈতিক নীতির প্রবক্তা ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে সেই সময় দু’জনের বেশি কাউকে নিজের পাশে পাননি।

জেটলির আরও বক্তব্য, দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি চাইলে রাজনীতিকেও উন্নত হতে হবে। গোঁড়া বিরোধিতার নীতি ছাড়তে হবে। তিনি বলেন, ‘‘খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, গোটা ১৫ পরিবার আমাদের লোকসভাকে শাসন করছে। আগে শিল্পের ক্ষেত্রেও ছবিটা এ রকমই ছিল। কিন্তু উদারীকরণের ফলে পরিস্থিতি বদলেছে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও সেটা বদলানো দরকার।’’ অর্থমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, দেশের আর্থিক উন্নতির স্বার্থে যে কোনও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ করতে গেলেই ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে বাধা দেওয়া হয়। এই প্রবণতা না ছাড়লে শিল্প, কর্মসংস্থান, পরিষেবা ক্ষেত্রের উন্নতি— কিছুই সম্ভব নয়।

মমতার সঙ্গে একান্তে কথা

তৃণমূল ভবনে মুকুল রায়দের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি অভিজাত হোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন‌্কার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন জেটলি এবং মমতা। তার ফাঁকে দু’জনের মধ্যে মিনিট দশেক একান্তে কথা হয়। দুই শিবির থেকেই দাবি করা হচ্ছে, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হলে ওই সৌজন্য বৈঠক স্বাভাবিক। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে ওই দু’জনের বৈঠকে অন্য রকম জল্পনাও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy