বন্ধন ব্যাঙ্কের উদ্বোধনে চন্দ্রশেখর ঘোষ ও অরুণ জেটলি। রবিবার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। ছবি: শৌভিক দে।
লাল থেকে নীল। রঙের এই পরিবর্তনের প্রশস্তি গেয়ে রবিবারের কলকাতায় হেঁয়ালি রচনা করলেন অরুণ জেটলি!
ব্যাঙ্ক হিসেবে ‘বন্ধন’-এর যাত্রা শুরুর অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাঁর সরকারের নীতি মেনে কলকাতা সফরেও জেটলি বুঝিয়ে দিতে ভোলেননি, রাজনীতি রাজনীতির জায়গাতেই থাকবে। উন্নয়নের জন্য রাজ্যের দিকে হাত বাড়াতে রাজনীতির রং দেখবেন না তাঁরা। যে কথা প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক বহু বার, বহু উপলক্ষে বলেছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এ দিন একই সঙ্গে শহর কলকাতায় নীল রঙের ছড়াছড়ি দেখে তাঁর ভাল লাগার কথাও শুনিয়েছেন জেটলি।
নীল রঙের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্বলতার কথা কারও অজানা নয়। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই শহরের পথঘাট, সরকারি বাড়ি সেজেছে নীল-সাদা রঙে। ব্যক্তিগত বাড়িতে নীল-সাদা রং করলে কর ছাড়ের কথাও ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। সেই শহরে দাঁড়িয়ে রবিবার জেটলি বললেন, এ বার কলকাতায় এসে বেশ ভাল একটি পরিবর্তন চোখে পড়েছে তাঁর। শহর ছেয়ে গিয়েছে নীল রঙে! তাঁর কথায়, ‘‘আগে যখন এসেছি, তখন লাল রঙে মোড়া থাকত এই শহর। সেই সময়ে নতুন শিল্প, নতুন সংস্থা তৈরি হওয়া তো দূরস্থান, এ রাজ্য ছেড়ে চলে গিয়েছিল পুরনো শিল্পও। দেখে ভাল লাগছে, রঙের পরিবর্তনের সঙ্গে এখন বাঙালি উদ্যোগপতির জন্ম হচ্ছে এই রাজ্য থেকে।’’
ইঙ্গিত বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার চন্দ্রশেখর ঘোষের দিকে। সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং ‘বন্ধন’ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অশোক লাহিড়ি। হাসতে হাসতেই জেটলির মস্করা, শহর লালে মুড়ে থাকাকালীন রাজ্য ছেড়েছিলেন এঁরাও। কিন্তু এখন ফিরে এসেছেন!
রঙের আড়ালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আসলে তৃণমূলকেই সখ্যের বার্তা দিলেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। পরে বণিকসভা আইসিসি-র অনুষ্ঠান শেষে এই নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে আবার হেসে নীরব থেকেছেন জেটলি! তাতে হেঁয়ালি আরও তীব্র হয়েছে!
তবে অনেকে আবার বলছেন, অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে রাজনীতির কথা বলবেন না, বরাবরই এই নীতি মেনে চলেন জেটলি। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিতর্ক যে তিনি চান না, তার ইঙ্গিত মিলেছে আগেও। তাঁদের মতে, এ বারও ব্যাঙ্কের অনুষ্ঠানে রাজনীতির কোনও বার্তাই জেটলি দেননি। নীল রং প্রসঙ্গে যা বলেছেন, সবই বন্ধনকে উদ্দেশ করে। কারণ, ‘বন্ধনে’র হোর্ডিংয়েও নীলের প্রাধান্য। উদ্বোধন উপলক্ষে সারা শহর যে হোর্ডিংয়ে ছেয়ে দিয়েছে বন্ধন ব্যাঙ্ক।
হতেই পারে, নীল রঙের প্রসঙ্গ তুলে শুধু ‘বন্ধনে’রই প্রশস্তি করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কিন্তু লাল রং থেকে নীলে পরিবর্তনের প্রসঙ্গ এমন ভাবে এনে ফেলেছেন, যা থেকে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক বার্তা পড়ে ফেলতেই পারেন কেউ! আর সেই সম্ভাবনায় ইন্ধন জুগিয়েছেন জেটলি নিজেই। এ নিয়ে যে সরাসরি প্রশ্ন এড়িয়েছেন তা-ই নয়, আইসিসি-র সভায় নিজের দলের নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন থেকে সুযোগ পেয়েও তৃণমূল সরকারকে বেঁধেননি।
জেটলির কাছে রূপার প্রশ্ন ছিল, রাজ্যে লগ্নির জন্য পুঁজি আছে। কিন্তু ব্যবসার অনুমোদন পেতে কেন হয়রান হতে হয় উদ্যোগপতিদের? জবাবে জেটলি বলেন, ‘‘রাজ্যগুলিকে আরও লগ্নিবান্ধব হতে হবে। কেন্দ্র যেমন অনুমোদন পাওয়ার পথ সহজ করতে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে, রাজ্যগুলিরও তা করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy